রাজা তৃতীয় চার্লস বাংলাদেশের যে জায়গায় এসেছিলেন

সারাদিন ডেস্কসারাদিন ডেস্ক
প্রকাশিত: ৮:৫১ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২২

বিবিসি বাংলা অবলম্বনে ছবি। তিনি সিকি শতাব্দি আগে তিন দিনের বাংলাদেশ সফরে এসে যা করেছিলেন তখনকার প্রিন্স অব ওয়েলস

রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যুতে সত্তর বছর উত্তরাধিকারী থাকার পর তিনি রাজা হিসাবে দায়িত্ব নিলেন রাজা তৃতীয় চার্লস। যুক্তরাজ্যসহ ১৪টি দেশের রাজা হিসাবে অভিষিক্ত হয়েছেন তিনি। এই রাজা একবার বাংলাদেশে এসেছিলেন সেসময়কার প্রিন্স অব ওয়েলস। ওই সফরে তিনি ঢাকার একটি বস্তিতেও গিয়েছিলেন।

বিবিসি খবর থেকে জানা যায়, রাজা চার্লস সেবার রাজকীয় বিমানে চড়ে বাংলাদেশে এসেছিলেন। উনিশশো সাতানব্বই সালের ২৬ থেকে ২৮শে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশে ছিলেন।

তার এই সফর সম্পর্কে যুক্তরাজ্যের রাজপরিবারের তথ্য সম্বলিত ওয়েবসাইট রয়্যাল ডটকমে উল্লেখ করা হয়েছে, “ফেব্রুয়ারি ২৭: আজ সকালে প্রিন্স অব ওয়েলসকে স্বাগত জানান বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট। এরপর তাকে স্বাগত জানান প্রধানমন্ত্রী।”

সেই সময় চার্লসের মিনিস্টার ইন ওয়েটিং ছিলেন বাংলাদেশের তৎকালীন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী। যখন কোন রাষ্ট্রপ্রধান বা গুরুত্বপূর্ণ কোন বিদেশি অতিথি সফরে আসেন, তখন দেশের যে মন্ত্রী বা সরকারের প্রতিনিধি তার সঙ্গে সার্বক্ষণিকভাবে থাকেন, তাকেই বলা হয় মিনিস্টার ইন ওয়েটিং।

ঢাকায় আসার পর তিনি মোহাম্মদপুরের টিক্কাপাড়া নামের একটি এলাকায় বস্তিবাসীদের উন্নয়নের একটি প্রকল্প দেখতে গিয়েছিলেন। কারণ এই প্রকল্পটি দুটি আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থার তত্ত্বাবধানে বাস্তবায়ন করা হচ্ছিল, যে দুটি সংস্থার পৃষ্ঠপোষক ছিলেন প্রিন্স অব ওয়েলস।

রয়্যাল ডটকমে বলা হয়েছে, ”ঢাকার টিক্কাপাড়ার বস্তিবাসীদের জন্য অ্যাকশন এইড রিলিফ প্রজেক্টের একজন পৃষ্ঠপোষক প্রিন্স অব ওয়েলস পরিদর্শন করেন। অ্যাকশন এইড এবং ওয়াটার এইডের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে তাকে জানানো হয়।”

Nagad

তার সেই সফরের সময় ছবি তুলেছিলেন তখনকার অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের আলোকচিত্রি পাভেল রহমান।

তিনি বলছেন, ”প্রিন্স চার্লসের সফরের জন্য আমি দুইতিনদিন ধরে প্রস্তুতি নিয়েছিলাম যে, বেল্ট ঠিক আছে কিনা, ব্যাটারির কি অবস্থা। তাকে আমি প্রথম দেখলাম এয়ারপোর্টে। সেদিন নাকি পরের দিন, আমার মনে নেই- তার সঙ্গে ঢাকার কাছেই একটা বস্তি, টিক্কাপাড়া বস্তিতে ছবি তুলতে গিয়েছিলাম।”

”বস্তিবাসী তো খুবই গরিব। সেখানে রানি এলিজাবেথের ছেলে চার্লস যে এসেছেন, তার সঙ্গে বস্তিবাসী বা তাদের কোন আলাদা করে তফাৎ মনে হচ্ছিল না। চার্লস দূরে দূরে থাকছেন বা তাদের পাশে যেতে চাচ্ছেন না, এমন কোন কিছু তার আচরণে একেবারে মনে হচ্ছিল না। খুব মনে হচ্ছিল, তিনি ঘনিষ্ঠভাবে তাদের কথা শুনছেন”।

”সেখানে একজন রিকশাচালককে চার্লসের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়া হলো। তিনি তার সঙ্গে হ্যান্ডশেক (করমর্দন) করলেন। রিকশাওয়ালা খুব ভাব নিয়ে কোমরে হাত রেখে বেশ একটা ভাব নিলেন। চার্লস খুব মনোযোগ দিয়ে তার কথা শোনার চেষ্টা করলেন। সেখানে একজন দোভাষী ছিলেন, যিনি বাংলা ইংরেজিতে অনুবাদ করে দিচ্ছিলেন,” বলছিলেন পাভেল রহমান।

পরদিন সকালে তখনকার প্রিন্স অব ওয়েলস ব্রিটিশ কাউন্সিলে যান। সেখানে তার সম্মানে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল।

রয়্যাল ডটকমে উল্লেখ করা হয়েছে, ঢাকায় ফেরার পর ”শেরাটন হোটেল একটি সংবর্ধনার পর দ্য প্রিন্স অফ ওয়েলস বিজনেস লিডারস ফোরামের প্রেসিডেন্ট হিসাবে হিজ রয়্যাল হাইনেস ‘পার্টনারস ইন ডেভেলপমেন্ট’ সেমিনারে অংশ নেন। বিকালে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া একটি রাষ্ট্রীয় ভোজে অংশগ্রহণ করেন প্রিন্স অব ওয়েলস”।