রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনে জাতিসংঘের বলিষ্ঠ ভূমিকার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

সারাদিন ডেস্কসারাদিন ডেস্ক
প্রকাশিত: ৪:১১ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২১, ২০২২

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জোরপূর্বক বিতাড়িত রোহিঙ্গাদের তাদের জন্মভূমি মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনে এবং এই সংকট সমাধানে আন্তর্জাতিক গোষ্ঠী ও জাতিসংঘকে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালনে তাঁর আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছেন। শরণার্থী বিষয়ক ইউএন হাইকমিশনার ফিলিপো গ্রান্ডি এখানে তাঁর সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে এলে প্রধানমন্ত্রী এই আহ্বান জানান।

মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় সকালে নিউইয়র্ক প্যালেস হোটেলে আন্তর্জাতিক শরণার্থী সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) হাইকমিশনার ফিলিপো গ্রান্ডির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে প্রধানমন্ত্রী এই আহ্বান জানান।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন ইউএনজিএ’র ৭৭তম অধিবেশনের সাইডলাইন বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যক্রমের ব্যাপারে সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন। গ্রান্ডির সঙ্গে ওই বৈঠকে শেখ হাসিনা রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমারে ইউএনএইচসিআরের কার্যক্রম জোরদারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

এর জবাবে ফিলিপো বলেন, তিনি দ্রুত মিয়ানমার সফর করবেন।প্রধানমন্ত্রী বলেন, জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের মাতৃভূমি মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের মাধ্যমেই রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান সম্ভব।ইউএনএইচসিআর হাইকমিশনারও এ বিষয়ে তাঁর সঙ্গে একমত প্রকাশ করেন। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, বৈঠক চলাকালে তারা বাংলাদেশের কক্সবাজার ও ভাসানচরে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের সহায়তায় ইউএনএইচসিআরের বর্তমান কার্যক্রম নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।

পরে একই স্থানে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) প্রসিকিউটর করিম এ এ খান কিউসি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে সাক্ষাৎ করেন।
তাঁরা বাংলাদেশ ও আইসিসি’র মধ্যে সহযোগিতার বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন।

প্রধানমন্ত্রী আইসিসি’র প্রসিকিউটরকে আশ্বাস দেন যে, মিয়ানমারে রোহিঙ্গা ভিকটিমদের জন্য ন্যায় বিচার ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে আইসিসি’র চলমান সকল প্রচেষ্টার ব্যাপারে বাংলাদেশ সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।
এ বৈঠকে খান আগামী বছরের শুরুর দিকে বাংলাদেশ সফরের ব্যাপারে তার আগ্রহ ব্যক্ত করেন।

Nagad

এছাড়া জাতিসংঘ হ্যাবিটাটের নির্বাহী পরিচালক মায়মুনা মোহম্মদ শরীফ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।

এখানে লটে নিউইয়র্ক প্যালেস হোটেলের কক্ষে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে তাঁরা টেকসই নগরায়ন এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভবিষ্যৎ সহযোগিতার গুরুত্ব বিবেচনা করে বাংলাদেশ সরকারের পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করেন।

এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের ভূমিহীন ও গৃহহীন মানুষের জন্য তাঁর সরকারের গ্রহণ করা আশ্রয়ণ প্রকল্পের সফলতার ব্যাপারে তাকে অবহিত করেন।

বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে সাম্প্রতিক গোলাগুলি সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন বাংলাদেশের অভ্যন্তরে গোলার আঘাত হানাকে ‘অনিচ্ছাকৃত ভুল’ বলে অভিহিত করেন। মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে তারা বাংলাদেশের অভ্যন্তরে লক্ষ্য করে গোলাবর্ষণ করছে না।

তিনি বলেন, ‘সেই নির্দিষ্ট সীমান্ত এলাকাটি খুব আঁকাবাকা। কখনও কখনও সীমান্ত বোঝা কঠিন। সে কারণে তারা আমাদের সীমান্তের ভিতরে ইচ্ছাকৃতভাবে গোলা বর্ষণ করছে না, আমাদের সীমান্তের অভ্যন্তরে যে একটি এবং দুটি শেল পড়েছে তা ভুলবশত পড়েছে।’

মোমেন আরও বলেন, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছে এবং মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যে তারা সতর্ক থাকবে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সরকার র‌্যাবের সাবেক ও বর্তমান ছয় কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য দেয়নি।

তিনি বলেন, সরকার নিষেধাজ্ঞা আরোপের কারণ জানতে চেয়েছে। ‘ তারা এখন পর্যন্ত কোনো সঠিক ও সুনির্দিষ্ট তথ্য দেয় নি। তাই আমরা বিষয়টি সম্পর্কে জানি না।’