‘প্রতিটি ব্যাংকে পর্যাপ্ত টাকা আছে, অতএব গুজবে কান দেবেন না’

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক:জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক:
প্রকাশিত: ৩:৩৩ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ৬, ২০২২

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, একটা শ্রেণি গুজব ছড়াচ্ছে। তারই ফলে ব্যাংক থেকে টাকা তুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এটা চোরের সঙ্গে সখ্য কি না জানি না। আমি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ও অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। প্রতিটি ব্যাংকে পর্যাপ্ত টাকা আছে। অতএব গুজবে কান দেবেন না।

মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছাত্রলীগের ৩০তম জাতীয় সম্মেলনে এসব কথা বলেন শেখ হাসিনা।

বিএনপি এবং তাদের পক্ষ নিয়ে কথা বলা মানুষের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেক জ্ঞানী-গুণী মানুষও জিয়ার সঙ্গে হাত মিলিয়ে কথা বলেছিল। এখনও অনেকে খালেদা জিয়া-তারেক জিয়ার সঙ্গে আছে। মানিলন্ডারিং, অস্ত্র কারবারি ও ২১ আগস্টে গ্রেনেড হামলার আসামি তারেক। খালেদা এতিমের টাকা আত্মসাতের মামলার আসামি। এ অপরাধীদের সঙ্গে অনেক জ্ঞানী-গুণীও গণতন্ত্রের কথা বলে। তারা বুদ্ধিজীবী না, তারা বুদ্ধিপ্রতিবন্ধীজীবী।

তিনি বলেন, বিএনপির দুই নেতা আমার কাছে এসে বলেছে— তারা নাকি টাকা না দিলে মনোনয়ন দেয় না। টাকা না দেওয়ায় তাদের মধ্য থেকে একজন মনোনয়ন পায়নি। এভাবেই তাদের নির্বাচন হয়। ফেলো কড়ি, মাখো তেল, অর্থাৎ যে টাকা দেবে সে প্রার্থী।

বিএনপির শাসনামলের দুর্নীতি ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমের ফিরিস্তি তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে খালেদা জিয়ার পেটুয়া বাহিনী সারাদেশে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করে দেয়। ঢাবিতে রাতের অন্ধকারে ভিসিকে সরিয়ে নতুন আরেকজনকে বসিয়ে দিয়ে ভিসির পদটাও দখল করে নেয়। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই শিক্ষকসহ বহু নেতাকর্মীকে হত্যা করে। তাদের অত্যাচার-নির্যাতনে বাংলাদেশ ছিল নির্যাতিত। শুধু ক্ষমতায় থাকলেই না, ক্ষমতার বাইরে থেকেও অগ্নিসন্ত্রাসের কথা সবার জানা।

আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় এসেছে মানুষের মানুষের ভাগ‌্যোন্নয়নে কাজ করেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অন‌্যের কাছে হাত পেতে বাংলাদেশকে চলতে হতো। এই হচ্ছে বিএনপি জামায়াতের অর্জন। বাংলাদেশ আজকে আর সেই দুর্দশাগ্রস্ত বাংলাদেশ নেই। একুশ বছর পর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে আর্থসামাজিক উন্নয়নে পদক্ষেপ নেয়। উদ্দেশ‌্য ছিলো লাখো শহীদের ত‌্যাগ বৃথা যেতে পারে না।

Nagad

তিনি বলেন, জাতির পিতাকে হত‌্যা করে যারা ক্ষমতায় এসেছে… মার্শাল ল জারি করে প্রতি রাতে কারফিউ…সেটি কি কারফিউ গণতন্ত্র? বিএনপি নেতাদের এটা জিজ্ঞেসা করা উচিত। খালেদা জিয়া, তারেক জিয়া এরা কারা? একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা করে আমাদের নেতাকর্মী হত‌্যাকারী, দশ ট্রাক অস্ত্র চালানকারী, মানিলন্ডারিংকারী। তারেক জিয়া, কোকো যে মানিলন্ডারিং করেছে এটা আমেরিকার তদন্তে বেরিয়ে এসেছে।

বিএনপির শাসনামলে দেশের পরিস্থিতি বর্ণনা করতে গিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, পাঁচবার দেশকে দুর্নীতিতে চ‌্যাম্পিয়ন বানিয়ে দেশকে এমন অবস্থায় নিয়ে গিয়েছিলো যেখান থেকে ইমার্জেন্সি হয়।

জনগণ আওয়ামী লীগকে স্বত:স্ফূর্তভাবে ভোট দেয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি জিতবে কিভাবে? এক সিটে যদি ৩ জন নমিনেশন দেয় তাহলে জিতবে কিভাবে? রিজভী একজনকে দেয়, ফখরুল একজনকে দেয়, লন্ডন থেকে তারেক একজনকে দেয়। টাকা যেখানে বেশি সেখানে মনোনয়ন দেয়। এভাবে নির্বাচন করে জেতা যায় না। সকালে একজনকে তো বিকালে আরেকজনকে, এভাবে তাদের ইলেকশন। যে দলের এই অবস্থা তারা গণতন্ত্র উদ্ধার করবে!

তিনি বলেন, যাদের জন্মই হিয়েছে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী জিয়াউর রহমানের পকেট থেকে। কিছু রাজনীতি শিখেছে আমাদের সাথে এরশাদ বিরোধী যৌথ আন্দোলন করতে গিয়ে। আওয়ামী লীগ যতবার ক্ষমতায় এসেছে জনগণের ভোটে এসেছে। ভিন্ন পথে কখনো ক্ষমতায় আসেনি, আসবেও না।

এ সময় করোনাকালীন মানবতার কল‌্যাণে কাজ করার জন‌্য ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের প্রশংসা করে তাদের প্রতি ধন‌্যবাদ ও অভিনন্দন জানান শেখ হাসিনা।

এর আগে বেলা সোয়া ১১টায় ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এই সম্মেলনস্থলে আসেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দলীয় সংগীতের মাধ‌্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা করা হয়। সাদা পায়রা উড়িয়ে তিনি সম্মেলন উদ্বোধন করেন।

সম্মেলনে সভাপতিত্ব করছেন, ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির বর্তমান সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় এবং সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য। এতে আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।