‘আইএমএফ বলেছে বাংলাদেশের যে অর্জন, যে অগ্রগতি সেটা অসামান্য’

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক:জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক:
প্রকাশিত: ৫:৩৩ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১০, ২০২২

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল-জানিয়েছেন, সম্প্রতি সফরে আসা আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) প্রতিনিধিদল বাংলাদেশের অগ্রগতির ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। তারা প্রাণখুলে, মনখুলে বলে গিয়েছে বাংলাদেশের যে অর্জন, যে অগ্রগতি সেটা অসামান্য। এই অর্জনগুলো একে একে হয়নি, শুধুমাত্র সরকারের হাত দিয়েও হয়নি। করদাতের বড় অবদান রয়েছে। আমাদের এগিয়ে যেতে দেশের সব মানুষদের অংশগ্রহণ করতে হবে।

শনিবার (১০ ডিসেম্বর) রাজধানীর অভিজাত একটি হোটেলে জাতীয় পর্যায়ে সর্বোচ্চ ভ্যাট প্রদানকারীদের পুরস্কার ও সম্মাননা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন

মন্ত্রী বলেন, ১৪ বছর আগে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) আকার ছিল ১০০ বিলিয়ন ডলার, এখন তা চারগুণ বেড়ে আমাদের ৪৬৫ বিলিয়ন ডলার হয়েছে। তেমনি মাথাপিছু আয় ৬৮৬ ডলার ছিল তা বেড়ে হয়েছে তা এখন ২৮৬৪ ডলার। আমাদের এই উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় করদাতাদের ভূমিকা অনেক। আপনাদের ত্যাগের কারণে আজ এখানে আমরা আসতে পারছি।

তিনি বলেন, আমরা এখন মধ্যম আয়ের দেশ। আমাদের লক্ষ্য ২০৩০ সালের মধ্যে উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশে নিয়ে যাওয়া। আর ২০৪১ এ উন্নত দেশের কাতারে যাওয়া। এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে জন্য ট্যাক্স দিতে হবে। আপনার যদি ট্যাক্স না দিলে আমাদের পিছিয়ে পড়া মানুষগুলোর জন্য কিছু করতে পারতাম না। শিগগির ভ্যাট সংগ্রহ পদ্ধতিকে আধুনিকায়ন করে আমরা এগিয়ে দেবো। আমাদের স্বপ্ন বাস্তবায়নে প্রত্যেককে অংশ নিতে হবে। এটা করলে টেকসই উন্নয়ন হবে।

ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্য মন্ত্রী বলেন, আমাদের পরামর্শ দেন, আমরা আপনাদের পরামর্শ নেবো। আমাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে আপনাদের শক্তিশালী করে ভ্যাট সংগ্রহ করা। এ ভাবেই দেশ এগিয়ে যাবে। আর দেশকে আরও এগিয়ে নিতে গেলে সবার এগিয়ে আসতে হবে।

মুস্তফা কামাল বলেন, ২০১২ সালে নতুন ভ্যাট আইন চালু করার পর নানা ঘাত ও প্রতিঘাতের কারণে সেটি যথাসময়ে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। বর্তমানে ভ্যাট রাজস্ব আদায়ের অন্যতম হাতিয়ার।

Nagad

সভাপতির বক্তব্যে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, গত তিন বছরে করোনার কারণে বিশ্ব অর্থনীতি ও বাংলাদেশের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত ছিল। চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে আরেক দফা সংকটে আছি। সেদিক থেকে আমরা রাজস্ব আদায়ে পিছিয়ে পড়িনি। ধারাবাহিকভাবে প্রবৃদ্ধির মধ্যে আছি। রাজস্বে গত বছরের প্রবৃদ্ধি ১৬ শতাংশ ছিল, এ বছরও আগের মতোই প্রবৃদ্ধি থাকবে। সামনে উন্নয়নশীল দেশের চ্যালেঞ্জ রয়েছে। চ্যালেঞ্জকে আমরা সুযোগ হিসেবেও দেখি। এতে আমাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। দেশের অভ্যন্তরীণ উৎপাদন থেকে নিজেদের চাহিদা পূরণ করতে পারি, সে কারণেই আমাদের মেইড ইন বাংলাদেশ স্লোগান।

তিনি বলেন, আমরা অটোমেশনের কাজ হাতে নিয়েছি। আমরা পলিসি সাপোর্টের মাধ্যমে কর প্রক্রিয়া সহজ করার ব্যবস্থা নিয়েছি। অনেক ক্ষেত্রে করহার কমিয়ে যাচ্ছি। করহার কমানোর প্রক্রিয়া অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে করছি। আমরা করনেট যত বৃদ্ধি করতে পারবো, ততই কর হার কমাতে সক্ষম হবো। আমাদের জনবলের ঘাটতি রয়েছে, সেটা পূরণে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আমাদের উদ্দেশ্য বিজনেস ও ইন্ডাস্ট্রিজকে সহায়তা করে যাওয়া।

অনুষ্ঠানে ২০২০-২১ অর্থবছরে উৎপাদন, ব্যবসায় ও সেবা ক্যাটাগরিতে জাতীয় পর্যায়ে পুরস্কার ও সম্মাননা তুলে দেয়া হয়। উৎপাদন খাতের ৩টি প্রতিষ্ঠান হলো অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, ইবনে সিনা ফার্মাসিউটিক্যালস ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেড এবং এসএমসি এন্টারপ্রাইজ লিমিটেড।

ব্যবসা খাতের ৩টি প্রতিষ্ঠান হলো- ওয়ালটন প্লাজা, আগোরা লিমিটেড ও ইউনিমার্ট লিমিটেড এবং সেবা খাতের ৩ প্রতিষ্ঠান হলো বিকাশ লিমিটেড, নগদ লিমিটেড এবং ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্স ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড কমার্স ব্যাংক লিমিটেড বা আইএফআইসি ব্যাংক।

প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ১০ ডিসেম্বর সপ্তমবারের মতো দিবসটি উদযাপিত হচ্ছে। এর আগে প্রতি বছরের ১০ জুলাই জাতীয় ভ্যাট দিবস পালিত হতো। বাংলাদেশে ১৯৯১ সালে মূসক প্রবর্তিত হওয়ার পর এ বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য ২০১১ সাল থেকে দিবস ও সপ্তাহ উদযাপন করা হচ্ছে।