নদী রক্ষার ক্ষেত্রে কোন আপোষ করি নাই : নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী

সারাদিন ডেস্কসারাদিন ডেস্ক
প্রকাশিত: ৬:৫৯ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৫, ২০২২

নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, নদী রক্ষার ক্ষেত্রে কোন আপোষ করি নাই। আর এটা সম্ভব হয়েছে শেখ হাসিনার মতো দক্ষ ও সাহসী নেতৃত্বের কারণে।

আজ বৃহস্পতিবার (১৫ ডিসেম্বর) নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে দেশের গুরুত্বপূর্ণ নদ-নদীর নাব্যতা এবং নদীর স্বাভাবিক গতিপ্রবাহ অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের বিষয়ে পরামর্শ প্রদান, সুপারিশ প্রণয়ন এবং বাস্তবায়নের জন্য গঠিত ‘টাস্কফোর্স’ এর ৪র্থ বৈঠকে প্রতিমন্ত্রী সভাপতিত্বকালে একথা বলেন।

প্রতিমন্ত্রী এসময় আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নদী রক্ষাসহ সবকাজ এগিয়ে নিতে চাই। স্থানীয় প্রশাসন যার যার অবস্থান থেকে কাজ করছে। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধে কিছুটা সমস্যা হলেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবকিছু স্বাভাবিক রাখতে পেরেছেন। নদী রক্ষায় সবচেয়ে বড় সাফল্য মানুষকে সচেতন করা এমনটি উল্লেখ করেন প্রতিমন্ত্রী।

নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী বলেন, নদীরক্ষায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বড় উদ্যোগ ‘টাস্কফোর্স’ গঠন। তিনি বলেন, দূষণের ক্ষেত্রে দূষণকারীদের বিরুদ্ধে মনিটরিং জোরদার করতে হবে। অনেক শিল্প কারখানায় ইটিপি আছে, কিন্তু সেগুলোর সঠিক ব্যবহার হয়না।

নদী রক্ষায় চ্যালেঞ্জের কথা উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, সরকারের ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে এ সকল চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব। নদীর প্রবাহ ঠিক রাখতে অবৈধ দখলরোধে সীমানা পিলার, ওয়াকওয়ে এবং বনায়নের জন্য ইকোপার্ক নির্মাণ করা হচ্ছে। নাব্যতা বৃদ্ধির জন্য বঙ্গবন্ধুর সময়ে সাতটি ড্রেজার সংগ্রহ করা হয়েছিল। বর্তমান সরকারের সময়ে ৮০টি ড্রেজার সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে ৫০টি সংগ্রহ করা হয়েছে। এছাড়া, সরকারের নির্বাচনী ওয়াদা অনুযায়ি ১০ হাজার কিলোমিটার নৌপথ খননের কাজ চলমান রয়েছে।

সভায় জানানো হয়, ঢাকার চারপাশের নদীসমূহের অবৈধ দখল ও দূষণরোধে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) ২০১০ সাল থেকে কাজ করে যাচ্ছে। ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত ২২ হাজার ৫৩৯টি স্থাপনা উচ্ছেদ এবং ৮৪১ দশমিক ৪৯ একর তীরভূমি উদ্ধার করা হয়েছে। উল্লেখিত এলাকায় ভরাটকৃত ২ লক্ষ ঘনমিটার বালু, মাটি, রাবিশ এবং ১ দশমিক ৫ লক্ষ টন বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে। নদী তীর দখলের অভিযোগে বিভিন্ন জনের থেকে ৩৮ লাখ ৩৬ হাজার ৪শ’ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে এবং ২০১৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত তীরভূমি দখল করে রাখা পণ্য নিলামের মাধ্যমে ১৮ কোটি ৭২ লাখ ৪৮ হাজার টাকা রাজস্ব আয় হয়েছে।
টাস্কফোর্সের সভায় পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি মেজর (অবঃ) রফিকুল ইসলাম বীরউত্তম, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোস্তফা কামাল, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মনজুর আহমেদ চৌধুরী এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

Nagad

এছাড়া এলজিআরডি মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, ঢাকা দক্ষিণ সিটি মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, ঢাকা উত্তর সিটি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম, শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, নারায়ণগঞ্জ সিটি মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভি, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরনসহ সংশ্লিষ্টরা অনলাইনে উপস্থিত ছিলেন।

সভায় আরও জানানো হয়, বুড়িগঙ্গা, তুরাগ শীতলক্ষ্যা ও বালু নদীর উচ্ছেদকৃত তীরভূমিতে ‘সীমানা পিলার স্থাপন, তীররক্ষা, পরিবেশ সংরক্ষণ, ওয়াকওয়ে, জেটিসহ আনুষাঙ্গিক অবকাঠামো নির্মাণের লক্ষ্যে প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় ৭ হাজার ৫৬২টি সীমানা পিলার নির্মাণ, ৫২ কিলোমিটার ওয়াকওয়ে, ১৪টি ভারী জেটি এবং তিনটি ইকোপার্ক নির্মাণ করা হবে। এ পর্যন্ত ৪ হাজার ৪৭৯টি সীমানা পিলার নির্মিত হয়েছে, ১ হাজার ১০১টির কাজ চলমান এবং ১ হাজার ৯৮২টির দরপত্র প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। ৬টি জেটি নির্মিত হয়েছে, ৮টি জেটির নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। ১০ কিলোমিটার ওয়াকওয়ে নির্মিত হয়েছে, ৪২ কিলোমিটার ওয়াকওয়ে নির্মাণাধীন। দু’টি ইকোপার্ক নির্মিত হয়েছে, একটির নির্মাণ কাজ চলমান।

সারাদিন. ১৫ ডিসেম্বর