দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতিতে অটল সরকার : আইনমন্ত্রী

সারাদিন ডেস্কসারাদিন ডেস্ক
প্রকাশিত: ৭:৫৮ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২০, ২০২২

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, দুর্নীতি একটি বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ, যা থেকে পৃথিবীর কোনো দেশই মুক্ত নয়। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্বের অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের মতো বাংলাদেশকেও দুর্নীতির ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবিলা করতে হচ্ছে। বাংলাদেশ সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান এবং জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে।

আজ মঙ্গলবার (২০ ডিসেম্বর) সকালে আন্তর্জাতিক ইসলামী সংস্থার (ওআইসি) সদস্য দেশগুলোর দুর্নীতিবিরোধী আইন প্রয়োগকারী কর্তৃপক্ষের জন্য মন্ত্রী পর্যায়ের দুই দিনব্যাপী সম্মেলনে এসব কথা বলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। সম্মেলনটি আজ সকালে সৌদি আরবের জেদ্দায় শুরু হয়। এ সময় সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এবং ওআইসির স্থায়ী প্রতিনিধি ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী উপস্থিত ছিলেন।

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক দুর্নীতির বিরুদ্ধে বর্তমান সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, আমরা বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে সমন্বয়, ব্যাংকিং ও নন ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের জন্য উন্নত নিয়ন্ত্রণ কাঠামো ও তদারকি ব্যবস্থা, বিভিন্ন স্তরে জাতীয় দুর্নীতি প্রতিরোধ কাঠামো, উন্নত শাসন ব্যবস্থা এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে গণসচেতনতা তৈরির জন্য প্রাতিষ্ঠানিক এবং কমিউনিটি পর্যায়ে বিভিন্ন পদ্ধতি নিয়েছি। এ ছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সততা ইউনিট, সততার দোকান ও সরকারি কর্মকর্তাদের জবাবদিহিতার জন্য গনশুনানির ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, আমরা ইতোমধ্যে সব স্তরে দুর্নীতি প্রতিরোধে ফৌজদারি আইন, স্বাধীন দুর্নীতি দমন কমিশন, তথ্যের অধিকার নিশ্চিতে তথ্য কমিশন, মানি লন্ডারিং আইন, সন্ত্রাসে অর্থায়ন বন্ধ, সন্ত্রাসী কার্যক্রম প্রতিরোধে পারস্পরিক আইনি সহায়তা, সরকারি ক্রয়ে স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণ এবং ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম প্রতিরোধসহ নানা উদ্যোগ নিয়েছি।

আইনমন্ত্রী বলেন, অবৈধ আর্থিক প্রবাহ রোধ, বাজেয়াপ্ত সম্পদ পুনরুদ্ধার এবং ফেরত দেওয়ার মাধ্যমে একটি দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখতে পারে।

এ বিষয়ে জাতিসংঘের দুর্নীতির বিরুদ্ধে কনভেনশনের সুস্পষ্ট বিধান থাকা সত্ত্বেও দুর্নীতি ও মানি লন্ডারিংয়ের মাধ্যমে অবৈধভাবে পাচার করা সম্পদ পুনরুদ্ধারে কয়েকটি দেশের অসহযোগিতায় আইনমন্ত্রী তার উদ্বেগ জানান।

Nagad

আনিসুল হক দুর্নীতি নেটওয়ার্কের অপতৎপরতা মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী কাঠামোর মূল দুর্বলতাগুলো চিহ্নিত করে এবং তা মোকাবিলায় যুগোপযোগী উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান

ম্মেলনে দুর্নীতি নেটওয়ার্কের অপতৎপরতা মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী কাঠামোর মূল দুর্বলতাগুলো চিহ্নিত করে এবং তা মোকাবিলায় যুগোপযোগী উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানান আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

আনিসুল হক বলেন, ‘আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক সহযোগিতা, কারিগরি সক্ষমতা বৃদ্ধি, দক্ষ জনবল ও উন্নত প্রশিক্ষণ দুর্নীতি প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমি বিশ্বাস করি, ওআইসির দুর্নীতিবিরোধী কনভেনশন রাষ্ট্রপক্ষগুলোকে এর উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য বৃহত্তর ও দ্রুত সহযোগিতার সুযোগ দেবে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য সমাজের সবাইকে সম্পৃক্ত করে আমাদের একটি ব্যাপক দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করতে হবে।’

সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন সৌদি আরবের দুর্নীতিবিরোধী কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট মাজিন ইব্রাহিম আল কাহমুস। ওআইসি মহাসচিব মহাসচিব ইব্রাহিম তাহা, জাতিসংঘের ড্রাগস অ্যান্ড ক্রাইম অফিসের নির্বাহী পরিচালক, ইন্টারপোলের মহাসচিবসহ ওআইসির সদস্য রাষ্ট্রগুলোর সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেন। সম্মেলনে সর্বসম্মতিক্রমে ওআইসির দুর্নীতিবিরোধী কনভেনশন গৃহীত হয়।