ধ্বংসস্তূপের নিচে জন্মানো শিশুটির অবস্থা স্থিতিশীল

সারাদিন ডেস্কসারাদিন ডেস্ক
প্রকাশিত: ২:০১ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ৮, ২০২৩

ছবি- সংগৃহীত

দক্ষিণ-পূর্ব তুরস্কে ও উত্তর সিরিয়ায় ভয়াবহ ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা আট হাজার ছাড়িয়ে গেছে। সময় যত গড়াচ্ছে, মৃত্যুর সংখ্যাও ততই বাড়ছে। আর ভেঙে পড়া ভবনগুলোর ধ্বংসস্তুপের ভেতর থেকে সামনে আসছে করুণ কাহিনী। তুরস্ক-সিরিয়ায় সীমান্ত অঞ্চলে ভূমিকম্প থেকে বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের খুঁজে বের করতে প্রচণ্ড ঠাণ্ডা আবহাওয়ার সাথে লড়াই করছে উদ্ধারকারীরা।

গত সোমবার (০৬ ফেব্রুয়ারি) তুরস্ক ও সিরিয়ায় এই শতাব্দীর ভয়াবহতম ভূমিকম্পে লাখ-লাখ শিশু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভয়াবহ এই ভূমিকম্পে ধসে পড়া ভবনের নিচে চাপ পড়ে হাজার-হাজার মানুষ মারা গেছেন। তাদের মধ্যে ছিলেন হতভাগ্য এক অন্তসত্ত্বা নারীও।

ধ্বংসস্তূপে চাপ পড়ে প্রাণ হারিয়েছেন তিনি। কিন্তু তার আগে জন্ম দিয়েছেন ফুটফুটে এক সন্তানকে। মৃত মায়ের পাশে ধুলো-বালি আর তীব্র ঠান্ডার মধ্যে নাড়ি জোড়ানো অবস্থাতে পড়েছিল শিশুটি। কয়েক ঘণ্টা পরে ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার করা হয় তাকে। সেই নবজাতকটি অক্ষত ও সুস্থ রয়েছে।
সে এখন হাসপাতালে নিবিড় যত্নে রয়েছে।

‘দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস’র খবর অনুযায়ী, ভূমিকম্প বিধ্বস্ত অনেক এলাকায় মানুষজন খালি হাতে উদ্ধারকাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। সেভাবে গত সোমবার (০৬ ফেব্রুয়ারি) সিরিয়ায় আলেপ্পোয় জিনদায়ার্স শহরে ধসে পড়া একটি ভবনের ধ্বংসস্তূপ সরাচ্ছিলেন খলিল আল শামি। ওই ভবনে তার ভাইয়ের পরিবার থাকতো। একপর্যায়ে খলিল তার ভাবির পা দেখতে পান। আরেকটু খেয়াল করতেই দেখেন, নাড়ির সাথে যুক্ত একটি নবজাতকও পড়ে রয়েছে পাশে। ধ্বংসস্তূপের নিচেই সন্তান জন্ম দিয়েছেন ওই নারী।

খলিল আল শামি জানান, ধুলোয় মাখামাখি হয়ে থাকা মাতৃনাড়ি কেটে দিতেই কেঁদে ওঠে শিশুটি। ৩৪ বছর বয়সী খলিল জানান, তিনি দ্রুত খুঁড়তে থাকেন। ভাবছিলেন, তার ভাবিও হয়তো বেঁচে রয়েছেন। কিন্তু না, তার ভাগ্য অতটা ভালো ছিল না। মারা গেছেন ওই নারী। তবে তার সন্তান, অর্থাৎ খলিলের ভাতিজি হাসপাতালে নিরাপদে রয়েছে। খলিল আরও জানান, একদিন পরেই তার ভাবির সন্তান ডেলিভারির দিন নির্ধারিত ছিল। কিন্তু আঘাতের কারণে হয়তো আগেই বাচ্চা জন্ম দিয়েছেন তিনি।

তালহা সিএইচ নামের একটি টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে ওই নবজাতককে উদ্ধারের ভিডিওটি প্রকাশ করা হয়। সেখানে দেখা গেছে, ধুলোয় ঢাকা এক উদ্ধারকারী একটি শিশুকে হাতে নিয়ে দৌড় দিচ্ছেন। ওই সময় শিশুটির শরীরে কোনো পোশাক ছিল না। তাকে ঢাকার জন্য অপর এক উদ্ধারকারী একটি চাদর ছুড়ে দেন।

Nagad

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি’র এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, এক স্বজন জানান, ভূমিকম্পটি আঘাত হানার পর পরই তার মায়ের প্রসব বেদনা দেখা দেয় এবং মারা যাওয়ার আগে তিনি সন্তান জন্মদান করেন। নবজাতকের বাবা, চার ভাইবোন এবং এক খালাও ভূমিকম্পে নিহত হয়েছেন। নাটকীয় একটি ফুটেজে দেখা গেছে, জিন্দারিসের ধ্বংসাবশেষ থেকে টেনে বের করার পর ধুলায় ঢেকে থাকা এক শিশুকে এক ব্যক্তি নিয়ে আসছেন। আফরিনের কাছে স্থানীয় একটি হাসপাতালের একজন চিকিৎসক জানিয়েছেন, সে এখন স্থিতিশীল রয়েছে।

সারাদিন/০৮ ফেব্রুয়ারি/এমবি