স্ত্রী-সন্তানের লাশের পাশে নিরুপায় বাবা

সারাদিন ডেস্কসারাদিন ডেস্ক
প্রকাশিত: ২:৫৯ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ৯, ২০২৩

আব্দুল আলিম মুয়াইনি, ছবি- রয়টার্স

দক্ষিণ তুরস্ক ও উত্তর সিরিয়ায় ভয়াবহ ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত অন্তত ১৫ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া দেশদুটির আড়াই কোটিরও বেশি মানুষ বিধ্বংসী এই ভূমিকম্পের শিকার হয়েছেন বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাব্লিউএইচও)।

তুরস্ক ও সিরিয়ায় হাজার হাজার ভবন ধসে পড়েছে এবং ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়া মানুষদের বাঁচাতে উদ্ধারকর্মীরা প্রাণপণ প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

বিধ্বংসী এই ভূমিকম্প থেকে প্রাণে বেঁচে যাওয়া লোকজন দুর্বিষহ অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন। অনেকেই এখন খাদ্য ও আশ্রয়ের জন্য ছুটছেন। যাদের স্বজন এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে আছেন, তাদের অসহায়ত্ব আরও বেশি।

রয়টার্সের ফটোগ্রাফার উমিত বেকতাসের উঠানো আব্দুল আলিম মুয়াইনির ছবিটি আলাদাভাবে নাড়া দিচ্ছে সবাইকে। স্ত্রী-সন্তানদের লাশের পাশে নিজের নিরুপায় হয়ে বেঁচে থাকার যে যন্ত্রণা তা দেয়াল চাপা পড়ে আঘাত পাওয়ার চেয়ে বেশি যন্ত্রণার, ছবিটি হয়তো সে কথাই বলছে।

রয়টার্সের ওই ফটোগ্রাফারের ছবির বর্ণনায় কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ‘আল জাজিরা’ জানিয়েছে, হাতায়ায় ধ্বংসস্তূপের নিচে পড়ে আছে একজনের নিথর দেহ। পাশেই হাত উঁচু করে সাহায্য প্রার্থনা করছেন এক ব্যক্তি।

আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, সিরিয়ান বংশোদ্ভূত আব্দুল আলিম গৃহযুদ্ধের কারণে সিরিয়া থেকে পালিয়ে তুরস্কে আসেন। তুরস্কে তিনি ইসরা নামে এক তুর্কি নারীকে বিয়ে করেন। তাদের মাহসেন ও বিসিরা নামে দুই কন্যা সন্তান রয়েছে। ভূমিকম্পে দেয়ালের স্ল্যাব ধসে তার স্ত্রী মারা গেছে। আর স্ল্যাবে পা আটকে স্ত্রীর পাশেই উদ্ধারের অপেক্ষায় ছিলেন আব্দুল আলিম। জ্ঞান থাকলেও বাম চোখে আঘাত পাওয়ায় তা খুলতে কষ্ট হচ্ছে তার। উদ্ধারকর্মীদের সাথে সে কথা বলেছেন।

Nagad

ফটোগ্রাফার উমিত বেকতাস আব্দুল আলিমের সাথে সরাসরি কথা বলতে না পারলেও তার দুই বন্ধু বিস্তারিত জানিয়ে বলেন, আব্দুল আলিমকে উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি পানি শূন্যতায় ভুগছেন। তার চিকিৎসা প্রয়োজন। তবে বাঁচানো যায়নি তার পরিবারকে। মাটিতে কম্বলে মোড়ানো আছে তিনটি দেহ ইসরা, মাহসেন, বিসিরার।

যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএস জানিয়েছে, গত সোমবার (০৬ ফেব্রুয়ারি) ভোরের দিকে তুরস্কে পর পর দুইটি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। প্রথমটি হয়েছে ভোর ৪টা ১৭ মিনিটে, সেটির মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৮। আর দ্বিতীয় ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে তার ১৫ মিনিট পর। সেটির মাত্রা ছিল ৬ দশমিক ৭।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশ খারমানমারাসের গাজিয়ানতেপ শহরের কাছে ভূপৃষ্ঠের ১৭ দশমিক ৯ কিলোমিটার গভীরে ছিল ভূমিকম্প দুটির উৎপত্তিস্থল। তুরস্ক ছাড়াও সিরিয়া, লেবানন ও সাইপ্রাসে কম্পন অনুভূত হয়েছে।

সারাদিন/০৯ ফেব্রুয়ারি/এমবি