আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের মানুষের সংগঠন: শেখ হাসিনা

নিজস্ব প্রতিবেদক:নিজস্ব প্রতিবেদক:
প্রকাশিত: ৩:২০ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২৩

আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বিএনপি নিজেরা নিজেদের দলের গঠনতন্ত্র মানে না, নিয়ম মানে না, আইন মানে না। সেই দলের সঙ্গে আওয়ামী লীগের তুলনা চলে না। যারা দুই বড় দল বলেন, তারা ভুল করেন। আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের মানুষের সংগঠন।’

আজ শনিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে গোপালঞ্জের কোটালীপাড়ায় আয়োজিত জনসভায় এ কথা বলেন শেখ হাসিনা।

তিনি দাবি করে বলেন, আওয়ামী লীগের তুলনা কখনও বিএনপির সঙ্গে হয় না। কারণ আওয়ামী লীগের জন্ম হয়েছে আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে জনগণের কল্যাণে কাজ করার জন্য। আর বিএনপি প্রতিষ্ঠিতই হয়েছে অবৈধভাবে, ক্ষমতার উচ্ছিষ্টভোগী হিসেবে।

কোটালীপাড়া তালিমপুর তেলিহাটি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ভবেন্দ্র নাথ বিশ্বাসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন শেখ হাসিনা। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ কেন্দ্রীয় নেতারা জনসভায় বক্তব্য দেন।

প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘আমাদেরকে বিএনপির সঙ্গে তুলনা করে কীভাবে। ২০০৮ সালের নির্বাচন তো সবাই মানে। সেই নির্বাচনে বিএনপি পেয়েছিল মাত্র ৩০টি আসন।’

গোপালগঞ্জবাসীর উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ওয়াদা করেছিলাম, সব ঘর আলোকিত করব। আজ বাংলাদেশের সব জায়গায়, সব ঘরে আমরা বিদ্যুৎ দিতে পেরেছি। এখন বিশ্ববাজারে তেলের দাম, গ্যাসের দাম, সবকিছুর মূল্য বেড়েছে। বিদ্যুৎ ব্যবহারে সবাই আপনারা সাশ্রয়ী হবেন। বিদেশে এমনকি লন্ডনেও প্রায় দেড়শ ভাগ বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে। আমরা কিন্তু যে টাকা দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করি, তার অর্ধেক মূল্যে দিচ্ছি মানুষের কাছে। আর সেচ কাজের জন্য আমরা ২০ শতাংশ ভর্তুকি দিয়ে দিচ্ছি। পাশাপাশি সোলার প্যানেলের মাধ্যমে যেন সেচ কাজ হয়, সে পদক্ষেপ নিচ্ছি।’

Nagad

শেখ হাসিনা বলেন, ‘তবে যে কথা দিয়েছিলাম—ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দেব, সব ঘর আলোকিত করব, সেটা আল্লাহর রহমতে করতে পেরেছি। আপনারাই সে শক্তি দিয়েছেন।’

তিনি বলেন, ‘পদ্মা সেতু নির্মাণ নিয়ে অনেক অপবাদ দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। আমরা চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছিলাম। কারণ দুর্নীতি করে নিজের ভাগ্য বদলাতে আসিনি, জনগণের ভাগ্য পরিবর্তন করতে এসেছি। তাই কেউ যখন মিথ্যা অপবাদ দেয়, সে অপবাদ নিতে আমি রাজি না।’

সরকারপ্রধান বলেন, ‘বিশ্বব্যাংক অপবাদ দিতে চেষ্টা করেছিল। কিন্তু তারা সফল হয়নি। আমরা নিজেদের টাকায় পদ্মা সেতু নির্মাণ করেছি বলেই আজ এত দ্রুত কোটালিপাড়ায় আসতে পারছি। বাংলাদেশের মানুষ আত্মমর্যাদা নিয়ে চলে, আমাদের কেউ অপবাদ দিলে আমরা তা মানব না।’

জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, মাদক, দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, মাদক, দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে। এ ব্যাপারে সবাই সতর্ক থাকবেন। নিজেদের সন্তান যেন মাদক, জঙ্গিবাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত না হয়।’

এদিন বেলা পৌনে ১১টার দিকে কোটালীপাড়ায় পৌঁছান সরকারপ্রধান। এরপর জনসভা মাঠ থেকে গোপালগঞ্জের বিভিন্ন এলাকার ৪৮টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর মধ্যে ৪৩টি নবনির্মিত উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধন ও পাঁচটি উন্নয়ন প্রকল্পের নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তিনি।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর, কোটালীপাড়া উপজেলা পরিষদ, গোপালগঞ্জ পৌরসভা, গণপূর্ত বিভাগ, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, কোটালীপাড়া পৌরসভা, গোপালগঞ্জ জেলা পরিষদ এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করেছে।

সারাদিন. ২৫ ফেব্রুয়ারি