ঢাকাসহ ৫ জেলার অবৈধ ইটভাটা ২ সপ্তাহের মধ্যে উচ্ছেদের নির্দেশ

সারাদিন ডেস্কসারাদিন ডেস্ক
প্রকাশিত: ৪:১৩ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২৩

বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রণে ঢাকাসহ ৫ জেলার সব অবৈধ ইটভাটা দুই সপ্তাহের মধ্যে উচ্ছেদের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এছাড়া ধুলোবালিময় রাস্তায় ভালো করে পানি ছিটাতে বলেছেন আদালত। একই সঙ্গে নির্মাণকাজ চলা বাড়ি বা রাস্তা এবং মাটি-বালু বহনকারী গাড়িগুলো ঢেকে রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন ও পরিবেশ অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্টদের এসব আদেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।

বিচারপতি কেএম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর হাইকোর্ট বেঞ্চ সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) এ আদেশ দেন। আদেশে আদালত ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, মানিকগঞ্জ ও গাজীপুর জেলায় থাকা অবৈধ ইটভাটা উচ্ছেদ করে দুই সপ্তাহের মধ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে (ডিজি) প্রতিবেদন দিতে নির্দেশও দেওয়া হয়।

আদালতে পরিবেশ অধিদফতরের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আমাতুল করিম।

এর আগে বায়ু দূষণরোধে ৯ দফা নির্দেশনা দিয়ে ২০২০ সালে রায় দিয়েছেন উচ্চ আদালত।

নয় দফা নির্দেশনা বলা হয়-

১. ঢাকা শহরের মধ্যে বালি বা মাটি বহনকারী ট্রাকগুলোকে ঢেকে পরিবহণ করতে হবে।

Nagad

২. যেসব জায়গায় নির্মাণকাজ চলছে সেসব জায়গার কনট্রাকটররা তা ঢেকে রাখবে।

৩. এছাড়া ঢাকার সড়কগুলোতে পানি ছিটানোর যে নির্দেশ ছিল, সে নির্দেশ অনুযায়ী যেসব জায়গায় এখনো পানি ছিটানো হচ্ছে না, সেসব এলাকায় পানি ছিটানোর ব্যবস্থা নিতে হবে।

৪. সড়কের মেগা প্রজেক্টের নির্মাণ কাজ এবং কার্পেটিং যেসব কাজ চলছে, যেসব কাজ যেন আইন কানুন এবং চুক্তির টার্মস অ্যান্ড কন্ডিশন মেনে করা হয় সেটা নিশ্চিত করার নির্দেশ।

৫. গাড়ির কলো ধোয়া ছাড়ে সেগুলো জব্দ করতে বলা হয়েছে।

৬. সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ অনুযায়ী রাস্তায় চলাচলকারী গাড়ির ইকোনোমিক লাইফ নির্ধারণ করতে হবে এবং যেসব গাড়ি পুরাতন হয়ে গেছে সেগুলো চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের নির্দেশ।

৭. যেসব ইটভাটা লাইসেন্সবিহীনভাবে চলছে, সেগুলোর মধ্যে যেগুলো এখনো বন্ধ করা হয়নি, সেগুলো বন্ধ করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ।

৮. পরিবেশ অধিদফতরের অনুমতি ছাড়া টায়ার পোড়ানো এবং ব্যাটারি রিসাইকিলিং বন্ধের নির্দেশ।

৯.মার্কেট এবং দোকানের বর্জ্য প্যাকেট করে রাখতে এবং তা মার্কেট ও দোকান বন্ধের পরে সিটি কর্পোরেশনকে ওই বর্জ্য অপসারণ করার নির্দেশ।

এই নয় দফা নির্দেশনা বাস্তবায়নের নির্দেশনা চেয়ে গত ৩০ জানুয়ারি সোমবার হাইকোর্টে আবেদন করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।

এর পরদিন ৩১ জানুয়ারি উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুসারে ঢাকার বায়ুদূষণে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা জানাতে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। সেই আদেশ অনুযায়ী গত ৫ ফেব্রুয়ারি পরিবেশ অধিদপ্তরের প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। ওই প্রতিবেদন দেখে বায়ুদূষণ রোধে আদেশ বাস্তবায়নে দুই সপ্তাহ সময় দেন হাইকোর্ট।

‘বছরে ৩১৭ দিন মারাত্মক দূষিত থাকে ঢাকার বায়ু’ শিরোনামে গত ৩০ জানুয়ারি গণমাধ্যমে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। এতে বলা হয়, দূষণের মাত্রা বিবেচনায় বছরের বেশিরভাগ সময় ‘অস্বাস্থ্যকর’ থাকে ঢাকার বাতাস। মাঝেমধ্যে এটা ‘বিপজ্জনক’ পর্যায়ে গিয়ে ঠেকে। বিশেষত শীতকালে বায়ুদূষণ পরিস্থিতি থাকে সবচেয়ে খারাপ। ৪৮ দিন ছাড়া বছরের বাকি সময় ঢাকার বাতাস বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) নির্মল বায়ুর মানমাত্রার চেয়ে খারাপ থাকে।

আরও পড়ুন: নিয়ন্ত্রণ ছাড়াই চলছে ৭০ শতাংশ ইটভাটা

এক গবেষণায় উঠে এসেছে, স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে শীতকালে ঢাকার বাতাস ১৬ গুণ বেশি দূষিত থাকছে।

সারাদিন. ২৭ ফেব্রুয়ারি