ত্রিভুজ প্রেমের জেরে কলেজছাত্র হত্যা, প্রেমিকসহ গ্রেপ্তার ৪

দিনাজপুর সংবাদদাতাদিনাজপুর সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ৭:৪৫ অপরাহ্ণ, মার্চ ৯, ২০২৩

ছবি- সংগৃহীত

দিনাজপুরে ত্রিভুজ প্রেমের জেরে কলেজছাত্র শাহরিন আলম বিপুল (১৮) হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে প্রেমিকসহ চার জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় একটি মোটরসাইকেল ও চারটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (০৯ মার্চ) দুপুরে দিনাজপুর পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার শাহ্ ইফতেখার আহম্মেদ এই তথ্য জানান।

গ্রেপ্তার যুবকরা হলেন- সদর উপজেলার শালকী (বোয়ালমাড়ী) এলাকার রশিদের ছেলে দেলোয়ার হোসেন (২০), উপশহরের উজ্জ্বল হোসেনের ছেলে শাকিব শাহরিয়ার (২২), একই এলাকার হামিদুর রহমানের ছেলে আসিফ মাহমুদ হৃদয় (১৯) এবং নিশ্চিতপুর এলাকার আফজাল হোসেনের ছেলে আশরাফুল হোসেনে মিলন (১৮)।

এর আগে গত সোমবার (০৬ মার্চ) দুপুরে দিনাজপুর জেলা স্টেডিয়ামের সিঁড়ির নিচে ময়লার স্তূপ থেকে বিপুলের লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত শাহরিন আলম বিপুল দিনাজপুর সদর উপজেলার ৯নং আস্করপুর ইউনিয়নের বোর্ডেরহাট গোবিন্দপুর গ্রামের মোস্তাফিজুর রহমানের ছেলে।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার বলেন, সম্প্রতি প্রাক্তন প্রেমিকার বান্ধবীর সাথে কথার বলা শুরু করেন দেলোয়ার। এর একপর্যায়ে ওই মেয়েকে পছন্দ করতে শুরু করেন তিনি। কিন্তু কিছুদিন আগে ওই মেয়ের সাথে শাহরিন আলম বিপুলের বন্ধুত্ব হয়। তাদের বন্ধুত্ব বিষয়টি দেলোয়ার মেনে নিতে পারছিলেন না। এই কারণে বিপুলকে হত্যার পরিকল্পনা করেন গ্রেপ্তার দেলোয়ার।

পুলিশ সুপার আরও বলেন, বিপুল দিনাজপুর সিটি কলেজের একাদশ শ্রেণির প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিলেন। তিনি ছবি তুলতে পছন্দ করতেন। এই বিষয়টি জানতে পেরে দেলোয়ার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি ভুয়া আইডি খুলে বিপুলের সাথে কথোপকথন শুরু করেন। কথোপকথনের মাত্র ৩ দিনের মাথায় একটি ক্যামেরা ধার দেওয়ার কথা বলে বিপুলকে দিনাজপুর স্টেডিয়ামে আসতে বলেন দেলোয়ার। এমনকি আসার জন্য তাকে বিকাশে ১০০ টাকা পাঠান হয়। বিপুল স্টেডিয়ামে এলেই বান্ধবীকে নিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। এর একপর্যায়ে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী দেলোয়ারসহ তার কয়েকজন বন্ধু মিলে পেছন থেকে বিপুলে মাথার আঘাত করেন। পরে গলায় চাকু মেরে মৃত্যু নিশ্চিত করেন তারা। বিপুলের মরদেহ স্টেডিয়ামের সিঁড়ির নিচে ময়লার স্তূপের মধ্যে রেখে পালিয়ে যান হত্যাকারীরা।

Nagad

তিনি আরও বলেন, পরে বিপুলকে মেসেঞ্জারে পাঠানো টেক্স মুছে দেন দেলোয়ার। এমনকি ওই ফেসবুক আইডি ডিঅ্যাক্টিভ করে দেন তিনি। মূলত ত্রিভুজ প্রেমের জেরে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।

শাহ্ ইফতেখার আহম্মেদ বলেন, এই ঘটনার পর পুলিশ তদন্ত শুরু করে। হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে চার জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের কাছ থেকে একটি মোটরসাইকেল ও ৪টি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়। এই ঘটনায় জড়িত আরও দুইজন পলাতক রয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। আসামিদের আদালতে পাঠানো হবে এবং রিমান্ড আবেদন করা হবে।

সারাদিন/০৯ মার্চ/এমবি