রাজধানীতে নববধূ হত্যায় দেবর-ননদসহ ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক:জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক:
প্রকাশিত: ৫:৪০ অপরাহ্ণ, মে ১৮, ২০২৩

রাজধানীর খিলক্ষেত থানা এলাকায় বিয়ের তিন দিনের মাথায় নববধূ মনিরা পারভীনকে যৌতুকের দাবিতে হত্যার দায়ে পাঁচজনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি তাদের প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে অর্থদণ্ড দিয়েছেন আদালত। তবে মনিরার স্বামী নাসির হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে খালাস দেয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৮ মে) ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৮-এর বিচারক মাফরোজা পারভীনের আদালত এ রায় দেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- নিহত মনিরার স্বামী নাসিরের ভাই মাসুদ, বোন হাসিনা ও তার স্বামী মিলন, মিলনের ভাই দেলোয়ার হোসেন এবং নাসিরের চাচা দিন ইসলাম। রায় শেষে সাজা পরোয়ানা দিয়ে তাদেরকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

সাত দফা পেছানোর পর এ মামলার রায় ঘোষণা করলেন আদালত। রায় শুনে কান্নায় ভেঙে পড়েন মনিরার বাবা মোস্তফা। এ সময় তিনি আদালতের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। এদিন তারা আদালতে হাজিরা দেন। রায় শেষে সাজা পরোয়ানা দিয়ে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়। ৭ দফা পেছানোর পর রায় ঘোষণা করলেন আদালত।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩ সালের ১৮ জুন বিকেলে মনিরা ওষুধ কেনার কথা বলে বাসা থেকে বের হয়ে আর ফেরেননি। পরিবার তার কোনো সন্ধানও পাচ্ছিল না। পরদিন লোকমুখে জানতে পারেন নাসির হোসেন কাজী অফিসে নিয়ে তাকে বিয়ে করেছে। একথা শোনার পর নাসিরের বাবা হাছেন আলীর কাছে যান মনিরার বাবা মোস্তফা এবং মেয়েকে উদ্ধার করে ফেরত দেওয়ার অনুরোধ করেন। তখন হাছেন আলী ক্ষিপ্ত হয়ে তার কাছে ১০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। টাকা না দিলে বাবা, মেয়েকে খুনের হুমকি দেন তিনি। পরদিন নাসির মনিরাকে নিয়ে তার বাড়িতে যান। বাড়িতে যাওয়ার সাথে সাথে নাসিরের বাবা, মাসহ পরিবারের অন্যরা মিলে মনিরাকে ক্রিকেট খেলার স্ট্যাম্প দিয়ে মারধর, কিল, ঘুষি দিয়ে গুরুতর জখম করে পাশের একটি বালুর মাঠে ফেলে রাখেন। স্থানীয় লোকজন মনিরাকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনদিন পর ২২ জুন মারা যান মনিরা।

এ ঘটনায় ২২ জুন মনিরার বাবা মোস্তফা খিলক্ষেত থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় নাসিরের বাবা, মা, চাচাসহ ১১ জনকে আসামি করা হয়। তবে মামলাটি তদন্ত করে ২০১৪ সালের ২৯ জানুয়ারি ৬ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা খিলক্ষেত থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) কেএম আশরাফ উদ্দিন। এরপর আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন। মামলার বিচার চলাকালে আদালত ১৩ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন।

Nagad

এই রায় শুনে কান্নায় ভেঙে পড়েন মনিরার বাবা মোস্তফা। আদালতের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান তিনি।