‘নদীর গর্জনে’ রাইতে ঘুমাইতে পারি না’

সারাদিন ডেস্কসারাদিন ডেস্ক
প্রকাশিত: ৭:৪৪ অপরাহ্ণ, জুলাই ২২, ২০২৩

ছবি- সংগৃহীত

“নদীর তীরে বাড়ি ফলে ‘নদীর গর্জনের’ শব্দে রাইতে ঘুমাইতে পারি না, কহন যে আমাগোরে ভাসায় নিয়ে যায় বাড়ি ভাঙন আতঙ্কে থাকি সব সময়”- বলছিলেন গৃহবধূ বিলকিস বেগম। কেবল বিলকিস একা নয় তারমতো একই অবস্থা জামালপুরের ইসলামপুর-মেলান্দহ দুই উপজেলার আলাই নদী তীরবর্তী প্রায় তিন কিলোমিটার এলাকার বাসিন্দাদের।

স্থানীয় জামে মসজিদের ইমাম হাফেজ আহমদ উল্লাহ বলেন, নদী ভাঙতে ভাঙতে মসজিদের কিনারে এসেছে। পিলার বেরিয়ে এসেছে। অজুখানা, টয়লেট নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে, পাশে কবর খানা সেটিও নেই। যেকোনো সময় এই মসজিদটি ভাঙনের কবলে পরতে পারে।

নদী ভাঙনে সব হারিয়ে নিঃস্ব জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, নদী ভাঙনের কারণে ঘর-বাড়ি আরায়ে এহন নিঃস্ব হয়ে গেছি, কুঠি যামু কি করমু, বাচ্চা-কাচ্চা নিয়ে অসহায় অয়ে আছি। থাকার আর কোন জায়গা নাই ।

জানা যায়, আলাই নদী তীরবর্তী এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে।ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে ফসলি জমি, ব্রীজ,ধর্মীয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ প্রায় পাঁচ শতাধিক বসতবাড়ি।

যমুনা থেকে উৎপত্তি আলাই নদীর। দুই উপজেলার বুক চিড়ে বয়ে যাওয়া আলাই নদী এখন অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইসলামপুর, মেলান্দহ উপজেলার ২ নম্বর কুলিয়া,পচাবহলা সাদিপাটি বাজার সহ প্রায় তিন কিলোমিটার নদীর দুই পাড়ের তীরবর্তী এলাকায় ভাঙন চলছে। এরই মধ্যে ভাঙনের শিকার হয়ে বেশ কিছু পরিবারের শেষ আশ্রয়স্থল বসতবাড়ি হারিয়ে দিশেহারা।

নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে গ্রামীণ সড়ক, কবরস্থান, শত শত একর ফসলি জমি। তা ছাড়া ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে পচাবহলা বাজার,নদীর দুই পাড়ের গুরুত্বপূর্ণ ব্রীজ, সড়ক, ফসলি জমি,সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আকন্দ বাড়ি জামে মসজিদ, মাদ্রাসা,গরুর খামারসহ প্রায় পাঁচশত বসতবাড়ি। প্রতিবছর ভাঙনের শিকার মানুষগুলো ভিটে মাটি হারিয়ে বিভিন্ন জায়গায় আশ্রয় নিচ্ছে। কেউ কেউ আবার পরিবার নিয়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছে।

Nagad

সচেতন নাগরিকরা মনে করেন, প্রতি বছর নদীর দুইপাড় ভেঙে ছোট হয়ে আসছে গ্রাম।প্রতিবার শুধু আশ্বস্ত না করে প্রতিফলন দেখতে চায় এলাকাবাসী,দাবি উঠেছে টেকসই বাধঁ নির্মাণের।

মেলান্দহ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম মিঞা জানান,আমি ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে এসেছি, ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে খাদ্য ও অন্যান্য সহায়তার ব্যবস্থা নিচ্ছি। তাদের তালিকা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে ভাঙন প্রতিরোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছি। তিনি বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারাও এখানকার অবস্থা গুরুত্ব দিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে আশ্বস্ত করেছেন। সূত্র-দেশ রূপান্তর

সারাদিন/২২ জুলাই/এমবি