বারবার বিএনপির ওপর আঘাত এসেছে, বহু ষড়যন্ত্র চলছে: ফখরুল

সারাদিন ডেস্কসারাদিন ডেস্ক
প্রকাশিত: ৩:৫৬ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২১, ২০২৩

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘বারবার বিএনপির ওপর আঘাত এসেছে। বহু ষড়যন্ত্র চলছে। দলকে ভেঙে ফেলা ও ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র হয়েছে। কিন্তু বিএনপির অগ্রযাত্রা থামানো যায়নি। কারণ বিএনপি হলো স্রোতস্বিনী ও প্রবহমান নদী। এখানে কেউ এসেছে কেউ চলে গেছে।’

সোমবার (২১ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন। এর আগে আগামী ১ সেপ্টেম্বর বিএনপির ৪৫তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষ্যে দলের অঙ্গ সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের নিয়ে যৌথসভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘পুলিশ মিছিলের পিছনে ককটেল মেরে, আবার আমাদের মিছিলে হামলা করেছে। সরকার ছাত্রলীগের হাতে আবার অস্ত্র তুলে দিয়ে আগের মতই খেলা খেলছে।

আশঙ্কা প্রকাশ করে তিনি বলেন, বর্তমান সরকার এমন একটি ঘটনা ঘটাতে চাচ্ছে , ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি করে যেভাবেই হোক বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের নিশ্চিহ্ন করা যায়। যেভাবে আগের মত করে ভোট করে ক্ষমতায় থাকা যায়। সেই লক্ষ্যই সরকার এগোচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্র হিসেবে পরিণত করতে চায় আওয়ামী লীগ, বিএনপি নয়।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, দেশের বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ হচ্ছে না, যা হচ্ছে মেগা প্রকল্প মেগা প্রজেক্টে। ইতোমধ্যে অনেক প্রকল্পের উদ্বোধন করে যাচ্ছে তারা। এগুলো কার জন্য, কিসের জন্য? এগুলো শুধু তাদের পকেট ভরার জন্য।

Nagad

মির্জা ফখরুল বলেন, তারা দাবি করে এগুলো তারা করছে। এগুলো কার টাকায় করছে? জনগণের ট্যাক্সের টাকায়। এই টাকার শতকরা ৮০ ভাগ তারা চুরি করে নিয়ে যায়। বাকি ২০ ভাগ টাকায় তারা কাজ করে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, মূল কথা- এদেশের মানুষ ভোট দিতে চায়, গণতন্ত্র চায়। তারা তাদের ভোট দিয়ে জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করতে চায়। দু’বেলা দু’মুঠো খেয়ে পরে বেঁচে থাকতে চায়।

২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার মামলার বিষয়ে এক প্রশ্নে মির্জা ফখরুল বলেন, বিষয়টি আওয়ামী লীগের একটি সাজানো নাটক। যেখানে মিটিং হওয়ার কথা ছিল সেখানে না করে অন্য জায়গায় তারা মিটিং করেছে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নামে তিনবার এফআইআর ছিলই না। তারেক রহমানের নাম কোনো তদন্তে উচ্চারিত হয়নি। একমাত্র মুফতি হান্নানকে দিয়ে ১৪৫ দিন তাকে আটক করে রিমান্ডে নেয়ার পর তাকে দিয়ে জোর করে কথা বলানো হয়েছিল। পরে কিন্তু তিনি আবার একথা বলেননি, অস্বীকার করেছিলেন। কিন্তু তার এই কথা আমলে নেয়নি। তিনি যাতে কোর্টে না যেতে পারেন সেজন্য তড়িঘড়ি করে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, কোন দেশ কী বলল, সেটা তাদের বিষয়। আওয়ামী লীগের মতো আমরা তো রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হইনি। তাদের রাজনৈতিক ভিত্তি নেই? আমাদের ভিত্তি আছে বলেই জনগণকে সাথে নিয়ে রাজনীতি করছি। এগিয়ে যাচ্ছি। ইনশা আল্লাহ, বাংলাদেশে মানুষ কখনো ব্যর্থ হয়নি। এবারো ব্যর্থ হবে না।

বিএনপির প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর কর্মসূচি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অন্যান্যবারের মতো আগামী ১ সেপ্টেম্বর সকাল ৬টায় নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলীয় পতাকা উত্তোলন, সময় মতো আলোচনা সভা করা হবে। পোস্টার প্রকাশ ও ক্রোড়পত্র প্রকাশ করা হবে। একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা করা হবে। বিস্তারিত কর্মসূচি আজ সোমবার দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকের আলোচনায় চূড়ান্ত হবে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, দক্ষিণের আহ্বায়ক মো. আব্দুস সালাম, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, কেন্দ্রীয় নেতা মজিবুর রহমান সারোয়ার, খায়রুল কবির খোকন, আব্দুস সালাম আজাদ, মীর সরফত আলী সপু, মো. মুনির হোসেন, তাইফুল ইসলাম টিপু, আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারী, অঙ্গসংগঠনের নেতাদের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা দলের ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানী, রাজীব আহসান, ছাত্রদলের রাজিবুল ইসলাম রাকিব, কৃষক দলের হাসান জাফির তুহিন, শ্রমিক দলের মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জু, মৎস্যজীবী দলের মো. আবদুর রহিম এবং অধ্যক্ষ সেলিম মিয়া, ওলামা দলের শাহ মোহাম্মদ নেছারুল হক, মহিলা দলের সুলতানা আহমেদ, হেলেন জেরিন খান, তাঁতী দলের আবুল কালাম আজাদ ও মজিবুর রহমান, জাসাসের হেলাল খান ও জাকির হোসেন রোকন প্রমুখ।