প্রণোদনার সুফল: অক্টোবরে রেমিট্যান্স এলো ২১ হাজার ৮৫০ কোটি টাকা

সারাদিন ডেস্কসারাদিন ডেস্ক
প্রকাশিত: ১১:১৪ পূর্বাহ্ণ, নভেম্বর ২, ২০২৩

রেমিট্যান্স আকৃষ্ট করতে ব্যাংকগুলো অতিরিক্ত প্রণোদনা দেওয়ায় বৈধ উপায়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রেমিট্যান্স বেড়েছে। তবে অক্টোবরে প্রবাসীরা ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে ১৯৭ কোটি মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন, যা গত তিন মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ।

সম্প্রতি প্রণোদনা দ্বিগুণ করার ঘোষণা দেয় ব্যাংকগুলো। এতে প্রতি ডলার রেমিট্যান্সে থেকে প্রবাসীদের স্বজনরা পাচ্ছেন বাড়তি ৫ শতাংশ হারে প্রণোদনা। এতে রেমিট্যান্সে প্রতি ডলারের দাম হয়েছে ১১৬ টাকার কিছু বেশি, যা খোলাবাজারের দরের চেয়ে বেশি। পাশাপাশি হুন্ডির প্রায় কাছাকাছি। সার্বিক দিক বিবেচনায় প্রবাসী বাংলাদেশিরা হুন্ডি (অবৈধ পথ) এড়িয়ে ব্যাংকিং চ্যানেলে পাঠাচ্ছেন রেমিট্যান্স। রেমিট্যান্সে নতুন জোয়ার সৃষ্টি করেছে, যা ডলার সংকট কমিয়ে রিজার্ভ বৃদ্ধিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে, এমনটাই বলছেন সংশ্লিষ্টরা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, অক্টোবরে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স এসেছে ১৯৭ কোটি মার্কিন ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সময়োপযোগী উদ্যোগের কারণে রেমিট্যান্স বেশি এসেছে।

সদ্যবিদায়ী অক্টোবর মাস শেষে প্রায় দুই বিলিয়ন ডলারের (১৯৭ কোটি ৭৫ লাখ ৬০ হাজার ডলার) রেমিট্যান্স এসেছে দেশে। দেশীয় মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১১০ টাকা ৫০ পয়সা ধরে) প্রায় ২১ হাজার ৮৫০ কোটি টাকার বেশি। প্রতিদিন এসেছে প্রায় ছয় কোটি ৩৯ লাখ ডলার বা ৭০৫ কোটি টাকা। রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ার কারণ হিসেবে খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাড়তি প্রণোদনা কাজে আসছে। প্রতি ডলারের ৫ শতাংশ প্রণোদনা করায় রেমিট্যান্স বেড়েছে।

মেজবাউল হক বলেন, ‘ব্যাংকগুলোকে তাদের আর্থিক উৎস থেকে অতিরিক্ত প্রণোদনা দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এটি বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে।’

প্রবাসী আয়ের ওপর সরকারের আড়াই শতাংশ প্রণোদনা দিয়ে ব্যাংকগুলো অতিরিক্ত আড়াই শতাংশ বেশি দামে ডলার কিনতে পারবে। মোট ৫ শতাংশ প্রণোদনা পাচ্ছেন। ফলে বৈধ উপায়ে দেশে রেমিট্যান্স আসছে।

Nagad

বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ড. সেলিম রায়হান বলেন, ‘রেমিট্যান্স প্রণোদনার দীর্ঘমেয়াদি সুফল আসবে না। সরকার ডলারের হারে অতিরিক্ত আড়াই শতাংশ দেবে। রেমিট্যান্সের ওপর মোট ৫ শতাংশ প্রণোদনা, এ ধরনের পদক্ষেপ সাময়িকভাবে রেমিট্যান্স বৃদ্ধি করবে। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদি কোনো সমাধান হবে না।’

ড. সেলিম রায়হান বলেন, ‘রেমিট্যান্স বাড়াতে হলে হুন্ডি বন্ধ করতে হবে। হুন্ডি বন্ধ করতে চাইলে মানি লন্ডারিং বন্ধ করতে হবে। এখন প্রচুর অর্থ বিদেশে পাচার হচ্ছে। যেকোনো উপায়ে এটা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।’

সানেমের নির্বাহী পরিচালক আরও বলেন, ‘ব্যাংকগুলো যত বেশি প্রণোদনা দেবে, হুন্ডি ব্যবসায় আগ্রহীরা আরও বেশি প্রণোদনা দেবে। সুতরাং, যতদিন হুন্ডি থাকবে, ততদিন বৈধ পথে প্রত্যাশিত রেমিট্যান্স আসবে না।’