পদ্মা-মেঘনায় মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা

চাঁদপুর সংবাদদাতা:চাঁদপুর সংবাদদাতা:
প্রকাশিত: ২:৪১ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২৪

চাঁদপুরে পদ্মা-মেঘনা নদীতে জাটকা রক্ষা কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। এ জন্য আগামীকাল বৃহস্পতিবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) মধ্যরাত থেকে নদীতে ইলিশসহ সকল প্রকার মৎস আহরণ বন্ধ থাকবে। আগামী ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা চলবে।

ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে ২০০৬ সাল থেকে মার্চ-এপ্রিল দুই মাস পদ্মা-মেঘনা নদীতে জাটকা ইলিশের নিরাপদ বিচরণ নিশ্চিতে সকল প্রকার মাছ শিকার নিষিদ্ধ করে সরকার।

নিষেধাজ্ঞার এই সময় চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলা থেকে হাইমচর চর ভৈরবী পর্যন্ত ৭০ কিলোমিটার এলাকায় জাল ফেলা, মাছ আহরণ, ক্রয়-বিক্রয়, মজুদ ও পরিবহন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

জানা গেছে, অধিকাংশ জেলেই সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে নৌকা ও জাল মেরামতের কাজ করে থাকেন। নিষেধাজ্ঞার দুই মাস সংসারের খরচ চালিয়ে কিস্তি পরিশোধ করা তাদের জন্য মরার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দাঁড়ায়। তাই তাদের দাবি, অভিযানের সময়ের ঋণের কিস্তি বন্ধ রাখা হোক।

জেলেরা বলছেন, নিষেধাজ্ঞা চলাকালে সরকারি খাদ্য সহায়তা অপ্রতুল। তার উপর ঋণের কিস্তির বোঝাও রয়েছে।

মোহনপুর নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. নাসির উদ্দিন জানান, আমরা জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন, মৎস্য বিভাগ, জনপ্রতিনিধি, কোস্টগার্ড ও জেলে নেতাদের সঙ্গে আলোচনা ও সমন্বয় করেছি। আইন অমান্য করে জাটকা আহরণ করলে আটক করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। নৌ-এলাকার সব থানা ও ইউনিটের পুলিশ নিরাপত্তার জন্য সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করবে।

Nagad

মতলব উত্তর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এএম জহিরুল হায়াত জানান, ইলিশ দিয়েই চাঁদপুর জেলা ব্র্যান্ডিং হয়েছে। তাই এই ইলিশ রক্ষার দায়িত্ব চাঁদপুরের সিকি কোটি মানুষের। আমরা সকল শ্রেণী-পেশার লোককে নিয়ে সচেতনতামূলক সভা করেছি।

তিনি জানান, জাটকা নিধনের সঙ্গে জড়িত কাউকেই কোনোভাবেই ছাড় দেয়া হবে না। আমরা চাঁদপুরের বিগত দিনের সুনাম অক্ষুন্ন রাখতে চাই। সবার সহযোগিতা থাকলে অবশ্যই দুই মাসের এ কর্মসূচি সফল হবে।

চাঁদপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য নুরুল আমিন রুহুল বলেন, ইলিশ আমাদের জাতীয় গৌরব। একে রক্ষায় জাটকা ও মা ইলিশ ধরা বন্ধ করতে হবে। দেশ থেকে কারেন্ট জাল উঠিয়ে দিতে হবে। এতে শুধু দেশের মানুষের চাহিদা পূরণই নয়, বিশ্ববাসীকেও ইলিশের স্বাদ ফিরিয়ে দিতে পারবে বাংলাদেশ।

চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা গোলাম মেহেদী হাসান বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার দুই মাস জেলেদের ঋণের কিস্তি বন্ধ রাখার লক্ষ্যে সকল এনজিও সংস্থাকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।’ যদি কোনো সংস্থা এই দুই মাস জেলেদের কিস্তি গ্রহণ করে, তাহলে প্রমাণ সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করার কথা জানান।