১০০ কোটি ডলার ঋণ দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক, মানতে হবে শর্ত
বাংলাদেশকে এক বিলিয়ন বা ১০০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ সহায়তা দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক। তবে দেশের ব্যাংক ও আর্থিক খাতের সংস্কার এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংককে শক্তিশালীকরণের কাজে এই অর্থ ব্যবহার করতে হবে। আর এ জন্য সংস্থাটি চারটি শর্ত বেঁধে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংককে। আগামী ডিসেম্বরে এই সহায়তা পাওয়া যেতে পারে।
রবিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের সঙ্গে বিশ্বব্যাংক কর্মকর্তাদের বৈঠক হয়। এ সময় সংস্থাটির কর্মকর্তারা এই শর্ত বেঁধে দেন কেন্দ্রীয় ব্যাংককে।
তবে এ জন্য খেলাপি ঋণের সংজ্ঞা পুনর্নির্ধারণ করতে হবে। এসএমই খাতে ঋণ দিতে নতুন প্রকল্প করতে হবে।
বিশ্বব্যাংক থেকে ঋণ পেতে যেসব শর্ত মানতে হবে— ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণ আদায়ে সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানির কাঠামো তৈরি এবং কোনো ঋণের প্রকৃত সুবিধাভোগী কে হবেন, তা নির্ধারণে নীতি প্রণয়ন করা। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ফরেনসিক নিরীক্ষা করলে সেটির কার্যপরিধি কী হবে, তা নির্ধারণ করতে হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকে বিধিবিধান বাস্তবায়নে (এনফোর্সমেন্ট) পৃথক বিভাগ গড়ে তুলতে হবে। এ ছাড়া বাকি ২৫ কোটি ডলার ঋণ মিলবে বিনিয়োগ ঋণ ও গ্যারান্টি–সুবিধা হিসেবে ব্যবহারের জন্য।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, এসব ঋণ পেতে কিছু শর্ত পালন করতে হবে বাংলাদেশকে। এর মধ্যে বেসরকারি খাতে ঋণ ব্যবস্থাপনা কম্পানি গঠন, আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে খেলাপি ঋণের নতুন সংজ্ঞা নির্ধারণ এবং নতুন গঠিত টাস্কফোর্সের অধীনে ফরেনসিক নিরীক্ষার কার্যপরিধি নির্ধারণ করতে হবে। তবে শর্তগুলোর ৫০ শতাংশের বিষয়ে ইতিমধ্যে সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ব্যাংক খাতের সংস্কারে জোর দেয় নতুন অন্তর্বর্তী সরকার। কেন্দ্রীয় ব্যাংকে নতুন গভর্নর নিয়োগের পর থেকে এখন পর্যন্ত ১১টি ব্যাংক ও ১টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করা হয়েছে। এর মধ্যে ৯টিরই মালিকানা ও নিয়ন্ত্রণ ছিল বহুল আলোচিত এস আলম গ্রুপের হাতে। এসব ব্যাংক থেকে এস আলম গ্রুপ নামে-বেনামে প্রায় দুই লাখ কোটি টাকা বের করে নিয়েছে, যা আদায় করা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছে ব্যাংকগুলো। তারল্য-সংকটে পড়ে এসব ব্যাংকের স্বাভাবিক লেনদেন কার্যক্রম ইতিমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে।