ডাকাতের ভয়ে সুন্দরবন যাচ্ছে না জেলেরা, রাজস্ব আদায়ে ভাটা!
সুন্দরবনে একসময় দস্যুমুক্ত ঘোষণার পর আবারও বনদস্যুদের তৎপরতা বেড়েছে। চাঁদার দাবিতে হামলার ঘটনাগুলোর ফলে বনজীবীরা এখন আর সুন্দরবনে যেতে সাহস পাচ্ছেন না, যার ফলে বনবিভাগের রাজস্ব আদায় উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে।
বিগত এক মাসে বনদস্যুরা প্রায় অর্ধশতাধিক জেলেকে অপহরণ করেছে, যাদের মুক্তিপণ নেওয়া হলেও এখনো অনেক জেলে দস্যুদের হাতে জিম্মি রয়েছে। এর ফলে বনজীবীরা পেশা পরিবর্তন করতে বাধ্য হচ্ছেন এবং এখন অনেকেই দিনমজুরের কাজ শুরু করেছেন।


২০১৮ সালে সুন্দরবনকে দস্যু মুক্ত ঘোষণা করা হলেও, বর্তমানে এই বনাঞ্চলে ডাকাতি ও অপহরণের ঘটনা বৃদ্ধি পেয়ে পরিস্থিতি শোচনীয় হয়ে উঠেছে। ২৭ জানুয়ারী সুন্দরবনের দুবলারচর সংলগ্ন এলাকায় বনদস্যু দয়াল বাহিনীর সদস্যরা জেলেদের উপর হামলা চালিয়ে তাদের অপহরণের চেষ্টা করে। তবে, জেলেরা প্রতিরোধ গড়ে তোলার ফলে তিন দস্যুকে কোস্টগার্ডের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
মুক্তিপণ দিয়ে মুক্ত হওয়া জেলেরা জানাচ্ছেন, তারা আর সুন্দরবনে যেতে চান না। তাদের দাবি, বনদস্যুদের কারণে জীবন অনেক কঠিন হয়ে পড়েছে। এরই মধ্যে অনেক জেলে পেশা বদল করে অন্য কাজকর্মে মনোনিবেশ করেছেন।
কোস্টগার্ড পশ্চিমজোনের অপারেশন কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার তারেক আহম্মেদ বলেন, আমরা নিয়মিত অভিযান চালিয়ে কিছু অপরাধীকে আটক করতে সক্ষম হয়েছি। তবে দস্যুদের দৌরাত্ম্য বেড়ে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত।
চাঁদপাই স্টেশন কর্মকর্তা মিল্টন রায় জানান, বর্তমানে সুন্দরবনে বনজীবীরা যেতেই পারছেন না, যার ফলে রাজস্ব আদায় কমে গেছে অর্ধেকের নিচে। ফেব্রুয়ারী মাসের প্রথম ১৫ দিনে চাঁদপাই স্টেশন থেকে ৪৭৮টি পারমিট দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারী মাসের প্রথম ১৫ দিনে মাত্র ২৩৬টি পারমিট দেওয়া হয়েছে, যা ২৪২টি কম।
এই অবস্থায়, সুন্দরবনে কর্মরত জেলেরা এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন, এবং ডাকাতি ও অপহরণের কারণে তাদের জীবিকা বিপন্ন হয়ে পড়েছে।