ড. ইউনূসেই আস্থা দলগুলোর, পদত্যাগ নয়-শক্ত হাতে হাল ধরার আহ্বান

সারাদিন ডেস্কসারাদিন ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২:৫৩ পূর্বাহ্ণ, মে ২৬, ২০২৫

রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে পদত্যাগের কথা ভেবেছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তবে উপদেষ্টা পরিষদ ও ঘনিষ্ঠজনদের পরামর্শে সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছেন তিনি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে ধারাবাহিক সংলাপ চালিয়ে যাচ্ছেন এই নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ।

রোববার (২৫ মে) রাজধানীর যমুনা রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবনে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে দ্বিতীয় দিনের সংলাপে অংশ নেন ড. ইউনূস। দুই দফায় হওয়া বৈঠকে অংশ নেয় ২০টি দলের প্রতিনিধিরা। বৈঠকে প্রায় সব দলই তার প্রতি আস্থা পুনর্ব্যক্ত করে এবং হাল না ছাড়ার আহ্বান জানায়।

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, গেল কয়দিনের ঘটনায় প্রধান উপদেষ্টার মন খারাপ ছিল, এজন্য তিনি পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কিন্তু মাঝনদীতে মাঝি বদলানো যায় না—এই বার্তাই আমরা তাকে দিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, অনেক ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তী সরকার দলনিরপেক্ষতা রক্ষা করতে পারছে না। আমরা নিরপেক্ষ আচরণ দেখতে চাই। মানবিক করিডোরসহ জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে পরামর্শ জরুরি।

আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে সংশয়ে ছিলেন, তাই পদত্যাগের কথা ভেবেছিলেন। কিন্তু আমরা বলেছি—আপনি দায়িত্ব ছেড়ে দিলে নির্বাচন ও সংস্কার অনিশ্চিত হয়ে পড়বে, জাতি দিশেহারা হয়ে পড়বে।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকী বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করে তবেই তার বিদায় নেয়া উচিত। তিনি আমাদের বলেছেন, নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রস্তুতি সম্পূর্ণ হলেই তারিখ ঘোষণা করা হবে। এ বিষয়ে সরকারও একমত। তিনি আরও বলেন, দূরত্ব তৈরি হচ্ছে, জনগণ দৃশ্যমান বিচার চায়। আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখেই বিচার প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে হবে।

Nagad

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ভারতীয় আধিপত্যবাদ আমাদের এই অর্জন মেনে নিতে পারছে না। সুযোগ পেলেই তা ধ্বংস করে দেবে। তাই আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।

সংলাপে নির্বাচন আয়োজন, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও মানবিক করিডোর ইস্যুতে দলগুলোর সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করেন ড. ইউনূস। নেতাদের মতে, দ্রুত একটি সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনই পারে সংকট সমাধানে সহায়ক হতে।

এর আগে শনিবার (২৪ মে) প্রথম দিনের সংলাপে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী এবং এনসিপির প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা। রাজনৈতিক সংকট নিরসনে এটি ছিল তার উদ্যোগের অংশ।