গলাচিপায় আখ চাষে বাম্পার ফলন

বাংলাদেশের একটি অন্যতম প্রধান অর্থকরী ফসল আখ ৷ পাট চাষের চেয়ে আখ চাষ অধিক লাভজনক বলে চাষিরা পাটের চেয়ে আখ চাষেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন বলে আখ চাষিদের মতামত। এছাড়া বাংলাদেশের প্রতিটি জেলাতেই কিছু না কিছু আখের চাষ হয়, তবে জলবায়ুর প্রভাব অনুযায়ী দেশের উত্তরাঞ্চলের জেলা গুলোর পাশাপাশি দক্ষিণ অঞ্চলও তার ব্যতিক্রম নয়।

আখ চাষের জন্য রয়েছে না উপযোগী চাষাবাদী জমি। এরই ফলশ্রুতিতে পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলায় আখ চাষ করে অধিক বাম্পার ফলনে তাদের আয়ের উৎস বেড়ে যাওয়ায় স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছেন কৃষকেরা।

গলাচিপা উপজেলার ডাকুয়া ইউনিয়নের পূর্ব পাড় ডাকুয়া গ্রামের আখ চাষি মোঃ জাফর মাল। তিনি ১’শ ২০ শতাংশ জমিতে ৩ লাখ টাকা খরচ করে প্রায় ৮ লাখ টাকার আখ বিক্রি করতে পারবেন বলে জানান। শুধু তিনিই নয়, মোঃ জয়নাল মাল ৩০ শতাংশ জমিতে ৬০ হাজার টাকা খরচ করে আড়াই লাখ টাকার আখ বিক্রি করার চিন্তা করছেন। এছাড়া মোঃ কবির মোল্লা ১’শত ৮০ শতাংশ জমিতে প্রায় ৪ লাখ টাকা খরচ করে ৮ থেকে ৯ লাখ টাকা বিক্রি করতে পারবেন বলে জানান।

এদিকে আখ চাষ করার মৌসুম হিসেবে বছরের অক্টোবর-এপ্রিল (কার্তিক-চৈত্র) এই দীর্ঘ সময়ের মধ্যে রোপণ করা যায় ৷ তবে আগাম রোপণই উত্তম, কারণ এই সময়ে রোপণ করলে আঁখ যথেষ্ট বৃদ্ধি হওয়ার সুযোগ পায়, আঁখের অংকুর উদ্যম ঠিকমত হয়, এবং আঁখের সাথে অন্য ফসল চাষ করা যায়।

এছাড়া এক একটি আখ উচ্চতায় ১.৮৫-৩.৭২ মিটার পর্যন্ত এমনকি ঌ.৩ মিটার পর্যন্ত হয়৷ অপর দিকে সরকারি গবেষণায় জানা যায়, প্রয়োজনের তুলনায় বাংলাদেশে চিনির উৎপাদন খুবই কম৷ এর প্রধান কারণ আখের হেক্টর প্রতি উৎপাদনের পাশাপাশি আখ মিলে চিনির উৎপাদন হার পৃথিবীর অন্যান্য দেশের তুলনায় অত্যন্ত কম৷ অধিক উৎপাদনশীল আখের জাতের অভাবও আর একটি কারণ৷ অন্যান্য কারণগুলো হলো উপযুক্ত সময়ের আগে বা পরে আখ কাটা, মারে আখ মাটিতে পড়ে ও শুকিয়ে যাওয়া, চিনিকলে পৌছাতে বা গ্রহণ করতে বিলম্বিত হওয়ায় আখ শুকিয়ে যাওয়া এবং কারখানার কারিগরি ভুলত্রুটি ইত্যাদি ৷বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশের মাটি ও জলবায়ু আখ চাষের জন্য বেশ উপযোগী ৷

প্রতিবন্ধকতাগুলো কাটিয়ে উঠে আধুনিক তথা বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে চাষ করলে এদেশে প্রতি হেক্টরে ১৩৫-১৩৬ টন আখ অনায়াসেই উৎপন্ন হতে পারে ৷

Nagad