হার্টের রোগের প্রথম কারণ ধূমপান!

সারাদিন ডেস্কসারাদিন ডেস্ক
প্রকাশিত: ৭:১৭ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১, ২০২২

সংগৃহীত

হার্টের রোগ হওয়ার জন্য ধূমপানকে প্রথম কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন ঢাকার বারডেম হাসপাতালের কার্ডিওলোজি বিভাগের সহযোগী আধ্যাপক এবং বিভাগীয় প্রধান ডা. মো: আজিজুল বারী। তিনি বলেন, ধূমপায়ীরা সব থেকে বেশি হৃদরোগের ঝুঁকিতে থাকে। এছাড়াও ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ এবং বাড়তি ওজনের জন্য হৃদরোগ হতে পারে। হাইপার টেনশন এবং পারিবারিক জেনেটিক অসুস্থতার ফলেও হৃদরোগ দেখা দিতে পারে।

একবার হৃদরোগ হয়ে গেলে এর চিকিৎসা দীর্ঘ মেয়াদী এবং ব্যয় বহুল। আর তাই আগেই প্রতিকার-মূলক ব্যবস্থা নিলে রোগে আক্রান্ত হওয়া থেকে অনেকটাই মুক্তি পাওয়া যায়। এ সম্পর্কে ডা. আজিজুল বারী বলেন, ধূমপান সম্পূর্ণ বন্ধ করতে হবে ও অ্যালকোহলসহ সব ধরনের মাদক থেকে দূরে থাকতে হবে।

তিনি বলেন, ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে পরিমিত খাবার খেতে হবে এবং নিয়মিত হাঁটতে হবে। উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিয়মিত ডাক্তার দিয়ে চেকআপ করাতে হবে। বয়স এবং উচ্চতা অনুযায়ী ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। কেননা, স্থুল শরীর হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। থাকতে হবে টেনশন মুক্ত।

যদি হৃদরোগ হয়েই যায় তখন আমরা কী করতে পারি? এ বিষয়ে হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. রহমত উল্লাহ বলেন, আমাদের হার্টের তিনটি রক্তনালীতে চর্বি জমে ব্লক তৈরি করে। ব্লকের পরিমাণ কম হলে সাধারণ চিকিৎসার মাধ্যমেই হৃদরোগ সারানো সম্ভব। তবে ব্লকের পরিমাণ বেশি হলে এনজিওগ্রাম পরীক্ষার মাধ্যমে দেখা হয় কত শতাংশ ব্লক হয়েছে।

সঠিক ডায়গোনোসিসের পর একটি রক্তনালীতে ব্লক পাওয়া গেলে এনজিওপ্লাস্টি করে রিং পরানো হয়। এই চিকিৎসার পর ডাক্তারের পরামর্শ মেনে চললে রোগী অনেক দিন সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে পারেন। এই চিকিৎসার খরচ একলাখ টাকার মধ্যেই করা সম্ভব। তিনটি রক্তনালীতেই ব্লক হয়ে গেলে সেক্ষেত্রে বাইপাস সার্জারি করতে হয়। এই চিকিৎসা কিছুটা ব্যয়বহুল। দুই থেকে তিন লাখ টাকার প্রয়োজন হতে পারে।

ডা. রহমত উল্লাহ বলেন, তবে আশার কথা হচ্ছে, হৃদরোগের সফল চিকিৎসা দেশেই সম্ভব। তিনি আরও জানান, প্রাইভেট হাসপাতালের তুলনায় সরকারি হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা ব্যয় কিছুটা কম।

Nagad

বাসায় বা কর্মক্ষেত্রে কেউ হৃদরোগে আক্রান্ত হলে, সময় নষ্ট না করে যত দ্রুত সম্ভব হৃদরোগ সেন্টারে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। নিয়মতান্ত্রিক জীবন-যাপন আর কিছু সাবধানতা মেনে চললে আমরা হার্ট সুস্থ রাখতে পারি।

উল্লেখ্য, গত ২৯ সেপ্টেম্বর বিশ্ব হার্ট দিবস। চলতি বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য, “ইউজ হার্ট ফর এভরি হার্ট।” বাংলাদেশেও দিবসটি বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যদিয়ে পালিত হয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, প্রতিবছর বিশ্বে ১৯ লাখ মানুষ তামাক ব্যবহারজনিত হৃদরোগে মৃত্যুবরণ করে। বাংলাদেশে প্রতিবছর দুই লাখ ৭৭ হাজার মানুষ হৃদ্‌রোগে মারা যায়, যার ২৪ শতাংশের জন্য দায়ী তামাক।

সারাদিন/০১ অক্টোবর/এমবি