পর্যটক শূন্য বান্দরবান!
বান্দরবানের দুর্গম পাহাড়ে যৌথ বাহিনীর সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান পরিচালনা করায় জেলার বিনোদন স্পটগুলোতে পর্যটক শূন্য হয়ে পরেছে। যে হোটেল-মোটেলগুলো সকাল-সন্ধ্যা মুখর থাকতো তা এখন সুনসান নীরবতা। পর্যটক না থাকায় ব্যবসা-বাণিজ্যেও নেমেছে স্থবিরতা।
সম্প্রতি জেলার রুমা ও রোয়াংছড়ি এলাকায় বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠীর আনাগোনা বেড়ে যাওয়ায় অভিযান পরিচালনা করছে যৌথবাহিনী। অন্য পর্যটনস্পটগুলো ভ্রমণের জন্য উন্মুক্ত রাখা হলেও গত সোমবার (১৭ অক্টোবর) সন্ধ্যায় রুমা-রোয়াংছড়ি এলাকার পর্যটন স্পটে ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করেছে স্থনীয় প্রশাসন। এই অবস্থায় পর্যটক শূন্য হয়ে পড়ছে সবুজে ঘেরা এই পাহাড়ি জেলা।


বান্দরবানে ঘুরতে আসা নোয়াখালী সরকারি কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী রাশেদ গণমাধ্যমকে জানান, বন্ধু-বান্ধব মিলে ১৫ জনের একটি দল ১০-১২ দিনের জন্য ঘুরতে এসেছেন। তাদের উদ্দেশ্য ছিল দেবতাকুম ও বগালেক ঘুরে দেখার। কিন্তু এই দুটি স্পট ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করার কারণে তাদের যাওয়া হচ্ছে না। ফলে আশপাশের স্পটগুলো ঘুরেই সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে তাদের।
বান্দরবান ঝিপ-মাইক্রোবাস চালক সমিতির সদস্য মো: জহিরুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান, মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) সারাদিন পর্যটকবাহী গাড়িগুলো বন্ধ থাকার পর থেকে পর্যটক অনেক কমে গেছে। এতে তারও ভাড়া কমে গেছে। অনেকটা অলস সময় কাটাচ্ছেন।
হোটেল হিলভিউয়ের ম্যানেজার মো: অমর ফারুক গণমাধ্যমকে জানান, যে পর্যটকেরা টানা কয়েক দিনের জন্য রুম বুকিং নিয়েছিলেন তারা দুই-একদিন থেকে ফিরে যাচ্ছেন। যারা আগাম বুকিং নিয়েছিলেন তারাও বুকিং বাতিল করে টাকা ফেরত নিচ্ছেন।
জেলা হোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম জানান, বান্দরবানে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে রুমা-রোয়াংছড়ি ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করেছ স্থানীয় প্রশাসন। কবে নাগাদ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে সে বিষয়েও কোনও নির্দেশনা নেই। পর্যটক উপস্থিতি অনেক কমে গেছে। হোটেল-মোটেলগুলোও প্রায় ফাঁকা। হোটেল মালিকরা চরম বিপাকে পড়েছেন। তাদের প্রতিদিন লোকসান গুনতে হচ্ছে। যৌথবাহিনীর চলমান অভিযান দ্রুত শেষ করে রুমা-রোয়াংছড়ি ভ্রমণে আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
বান্দরবান জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভিন তিবরীজি গণমাধ্যমকে জানান, যৌথবাহিনী সীমান্তবর্তী দুর্গম এলাকায় সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান পরিচালনা করছে। ফলে পর্যটকদের নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনা করে ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। অভিযান শেষ না হওয়া পর্যন্ত এ নির্দেশনা বলবৎ থাকবে। তবে স্থানীয়দের জন্য চলাচল উন্মুক্ত থাকবে।
সারাদিন/২০ অক্টোবর/এমবি