অন্যের জমি লিজ নিয়েই সবজি চাষ করে বছরে আয় লক্ষ লক্ষ টাকা

কলাপাড়া(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি :কলাপাড়া(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি :
প্রকাশিত: ৭:৩১ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ৫, ২০২৩

কলাপাড়ায় নীলগঞ্জ ইউনিয়নের মজিদপুর গ্রামের মৃত: কাজেম আলীর পুত্র একজন সফল কৃষক মো. কালাম হাওলাদার নিজ এলাকাতেই ফসলী মাঠে শ্রম দিয়ে যাচ্ছেন দুই যুগের বেশি সময় ধরে। শত কষ্ট এবং ঝড় বৃষ্টিতে ভয় না করে অন্যের তিন একর ভাড়াটে জমিতে গড়ে তুলেছেন হরেক রকম সবজির ক্ষেত। এর মধ্যে এবছর উচ্চমূল্যের সবজি চাষে বাজিমাত করেছেন তিনি।

ইতোমধ্যে সম্প্রতি মৌসুমে ব্রকলি, চাইনিজ ক্যাবেজ, লেটুস, রাখাইন বেগুন, বাধা কপি, ফুল কপি, ওলকপি, পালন শাক, ভাটি শাক ও টমেটোসহ প্রভৃতি জাতের ফসল উৎপাদন করে তা বাজারজাত করেছেন। তবে উচ্চমূল্যের সবজি চাইনিজ ক্যাবেজ, লেটুস এবং ¯েœা-হোইট জাতের ফুলকপি বিক্রিতে কৃষি বিভাগকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন এই খামারি।

রবিবার (৫ ফেব্রুয়ারি) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কৃষক কালাম গরীব কৃষক পরিবারে জন্ম হওয়ায় লেখা পড়া তেমন একটা করতে পারেননি তিনি, অভাবের সংসারে বাবার সহযোগিতার হাত বাড়াতে ছোট বেলা থেকেই কৃষিতে মনযোগী হন। তবে নিজের জমি না থাকায় রোদে পুড়ে দীর্ঘ একযুগ কঠোর পরিশ্রম করতে হয়েছে তাকে। এরপর স্থানীয়দের কাছ থেকে জমি লিজ নিয়ে শুরু করেন প্রভৃতি সবজী চাষ। আর লিজ নেয়া অন্যের জমিতে ফসল ফলিয়েই বাজিমাত করেন তিনি। যার এখন বছরে আয় কয়েক লাখ টাকা।

স্থানীয় সূত্র ও কৃষক কালাম জানায়, তিনি এক বছর মেয়াদী জমি লিজ নিয়ে তিন একর জমিতে সবজি চাষ করেছেন এ মৌসুমে। নিজের ঘাম ঝরানো পরিশ্রমের পাশাপাশি চারজন বদলা নিয়ে ক্ষেতের পরিচর্যা করেন। দুই লক্ষাধিক টাকা উৎপাদন খরচ করে ইতিমধ্যে সাড়ে তিন লাখ টাকা বিক্রি করেছেন। এছাড়াও ক্ষেতে বিক্রয়যোগ্য এখনো আড়াই লাখ টাকার ফসল রয়েছে। শেষ সময়ে সবজির দাম একটু কম থাকে। রমজান মাসকে কেন্দ্র কওে আবার নতুন নতুন সবজি উৎপাদনের লক্ষ্যে বীজ এবং চারা রোপণে ক্ষেত প্রস্তুত করা হচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, জীবনে অনেক কষ্ট করে এখন তিনি এ সবজি চাষ করেই ভাগ্য বদল করেছেন। এছাড়াও সবজি বিক্রির টাকা দিয়ে ছেলে মেয়েদের উচ্চশিক্ষা লাভের পাশাপাশি ধান চাষের জন্য দুই বিঘা জমিও কিনেছেন। ভবিষ্যতেও এ সবজি চাষ ও উৎপন্ন করে আরো বড় ধরনের পরিকল্পনা রয়েছে তার।

কৃষক কালামের ক্ষেতের রোজ কামলা ছিদ্দিক জানান, প্রতিদিন ৬০০ টাকা ঠিকায় কালামের ক্ষেতে কাজ করেন তিনিসহ মোট চারজন। কৃষক কালামের ক্ষেত আরো বড় হলে এ খামারে বেশি বেশি শ্রমিকরা কাজের সুযোগ পাবে। তবে তিনি বলেন, কৃষক কালামের এ সবজি ক্ষেতের জন্য সরকারী সহায়তা প্রয়োজন।

Nagad

কলাপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এ আরএম সাইফুল্লাহ জানায়, কৃষক কালাম একজন সফল কৃষি উদ্যোক্তা। তার নিজের জমি না থাকলেও অন্যের জমি লিজ নিয়ে সবজি চাষে তিনি তাক লাগিয়েছেন। কৃষক কালামকে কৃষি বিভাগ থেকে বিনামূল্যে সার, বীজ, কীটনাশক, নেট, ঝাজড়ি, ফসল বিক্রির কাজে ব্যবহৃত ক্যারেট, সেচ দেয়ার জন্য পাম্প দেয়া হয়েছে। এছাড়াও তার ক্ষেতে উৎপাদিত উচ্চমূল্যের লেটুস বিক্রিতে ফরেনারদের সাথে যোগাযোগ করে দেয়া হয়েছে। তার সকল সহযোগিতার লক্ষে কৃষি বিভাগ সর্বদাই সচেষ্ট রয়েছে বলে জানান তিনি।

সারাদিন. ৫ ফেব্রুয়ারি