‘জিয়ার নির্দেশে’ কর্নেল নাজমুল হুদাকে হত্যার অভিযোগ, মামলা

সারাদিন ডেস্কসারাদিন ডেস্ক
প্রকাশিত: ৭:১৪ অপরাহ্ণ, মে ১১, ২০২৩

কর্নেল খন্দকার নাজমুল হুদা বীরবিক্রমকে হত্যার ঘটনায় নির্দেশদাতা হিসেবে সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর খুন হন। সেই ঘটনার ৪৮ বছর পর তার মেয়ে সংসদ সদস্য নাহিদ ইজহার খান একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় ১০ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের মেজর (অব.) আব্দুল জলিলকে আসামি করা হয়েছে। এছাড়া বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের নির্দেশে এই হত্যাকাণ্ড হয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।

গতকাল বুধবার (১০ মে) রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় এই মামলাটি দায়ের করা হয়।

মামলার বিষয়ে নাহিদ ইজহার খান বলেন, ‘১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর খুন হন আমার বাবা কর্নেল খন্দকার নাজমুল হুদা বীরবিক্রম। আমার বয়স তখন ছিল পাঁচ বছর, আর আমার বড় ভাইয়ের আট বছর। আমার বাবা রংপুরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ‘‘৭২ বিশেষ কমান্ডার’’ হিসেবে কর্মরত অবস্থায় ঢাকায় বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ প্রাঙ্গণে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিপথগামী বিশৃঙ্খল সদস্যদের হাতে নিহত হন। তার সঙ্গে অপর দুই সেক্টর কমান্ডার মেজর জেনারেল খালেদ মোশারফ বীর উত্তম এবং কর্নেল এ টি এম হায়দার বীর উত্তম নিহত হন।’

এ সংসদ সদস্য বলেন, ‘আমাদের অনুসন্ধানে আমরা জানতে পেরেছি, তৎকালীন সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল জিয়াউর রহমান এবং জাসদ নেতা লেফটেন্যান্ট কর্নেল অবসরপ্রাপ্ত আবু তাহেরের নির্দেশে ১০ ইস্ট বেঙ্গলের কর্মকর্তা, জেসিও ও সৈন্যরা সঙ্ঘবদ্ধভাবে ঠাণ্ডা মাথায় পরিকল্পিতভাবে এ হত্যাকাণ্ড ঘটায়। লেফটেন্যান্ট কর্নেল সিরাজ (তৎকালীন ক্যাপ্টেন) ও মেজর মুক্তাদির (তৎকালীন ক্যাপ্টেন ও পরে পেট্রোবাংলার সাবেক চেয়ারম্যান) ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন।’

তিনি বলেন, ‘আরও জানতে পারি, ১০ ইস্ট বেঙ্গলের কর্মকর্তা, জেসিও ও সৈনিকদের সঙ্গে মেজর মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান (অবসরপ্রাপ্ত) উল্লিখিত তিন সেনা কর্মকর্তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি করে মৃত্যু নিশ্চিত করার পর বেয়নেট চার্জ করে।’

নাহিদ ইজহার খান বলেন, ‘বর্তমানে বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী সরকার ক্ষমতায় আছে। দেশবাসী ন্যায়বিচার পাচ্ছে। তাই আমি আমার বাবাসহ তিন বীর মুক্তিযোদ্ধা সামরিক কর্মকর্তাকে হত্যার বিচার দাবি করছি। হত্যাকাণ্ডের সুনির্দিষ্ট তদন্ত করে অনতিবিলম্বে দোষীদের বিচার করা হোক।’

Nagad

শেরেবাংলা নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উৎপল কুমার বড়ুয়া বলেন, ‘জিয়াউর রহমানের নির্দেশে কর্নেল খন্দকার নাজমুল হুদা বীরবিক্রমসহ তিন সেনা কর্মকর্তাকে হত্যা করা হয়– এই অভিযোগে নাজমুল হুদার মেয়ে বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় অবসরপ্রাপ্ত মেজর মোহাম্মদ আব্দুল জলিলের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। আমরা মামলার অভিযোগের বিষয়ে খতিয়ে দেখছি, তদন্ত করছি। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গেও কথা বলছি।’

উল্লেখিত আসামিদের মধ্যে মেজর (অব.) আব্দুল জলিল ছাড়া আর কেউ বেঁচে নেই। এছাড়া, অজ্ঞাতনামা আরও ২০ থেকে ২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।