ভুতুড়ে গ্রাম মঙ্গলপুর, শতবছর ধরে কেউ বসবাস করে না যে গ্রামে

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি:ঝিনাইদহ প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: ৩:৪৪ অপরাহ্ণ, মে ২৮, ২০২৩

উপজেলা শহর থেকে মাত্র ৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত গ্রাম । যার নাম মঙ্গলপুর। বিশ্বাসই হবে না এই গ্রামে সবই আছে শুধু মানুষের বসবাস নেই। এভাবে পার হয়ে গেছে ৮ দশক। শুনতে অবাক লাগলেও ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার এলাঙ্গী ইউনিয়নের গ্রামের তালিকায় রয়েছে এই নামটি।

ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ডাকবাংলা বাজারের আল মামুন জানান, শুনেছি এমন এক গ্রাম আছে । আজকের এই আধুনিক যুগে এমন গ্রাম শুনে দেখতে আসলাম। অনেকে বলেন ভুতুড়ে গ্রাম বা ভ’তের গ্রাম। গ্রামে ঢুকলেই গা ছমছম করে। কেউ বলে আশি বছর আবার কেউ বলে শত বছর আগেই গ্রামটি জনশূন্য হয়ে পড়ে।

আরেক দর্শনার্থী শিবলী নোমন জিম জানান, আজব এক গ্রাম মঙ্গলপুর । একেবারেই নিস্তব্ধ, শুনশান চারিদিক । কিছু জায়গায় চাষ হলেও এখনও কালো অন্ধকার জঙ্গলের অস্তিত্ব দেখা যায় । যেখানে চোখে পড়বে একটি ইদগা । অবাক কর ঘটনা যেখানে শতবছরেও মানুষের বসবাস গড়ে ওঠেনি ।

ইউনিয়ন ভূমি অফিস সূত্রে জানা যায়, প্রায় এক বর্গকিলোমিটার আয়তনের এ গ্রামে এখনও রাতে মানুষ ঢোকে না কোন এক অজানা ভয়ে। এলাঙ্গী ইউনিয়নের ৬৬ নম্বর মৌজায় অবস্থিত গ্রামটি। তবে ২০২২ সালে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ঘরে ৯টি পরিবার বসবাস শুরু করেছে।

পাশের গ্রামের ইসলাম মিয়া জানান, কথিত আছে, এই গ্রামে একসময় অনেক মানুষ বসবাস করতো। যার অধিকাংশ মানুষ ছিল হিন্দু সম্প্রদায়ের । কিন্তু হঠাৎ গ্রামে মহামারী আকারে কলেরা ছড়িয়ে পড়ে এবং বহু মানুষ মারা যায়। তখন সবাই বিশ্বাস করতে শুরু করে “গ্রামে অমঙ্গল কিছুর প্রবেশ হয়েছে । গ্রামের মানুষ অন্যত্র যেতে শুরু করে। কেউ আবার ভারতে চলে যান। একবারেই শূন্য হয়ে যায় মঙ্গলপুরে মানুষের বসবাসের কোটা। এখন এই গ্রামে শুধুই করা হয় চাষাবাদ। অনেক মানুষ কৌতুহলবশত একনজর দেখতে আসে গ্রামটিতে। আবার বেলা থাকতেই বেরিয়ে পড়ে গ্রাম থেকে।

কোটচাদপুর এলাঙ্গী ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের মিজানুর রহমান খান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আসলেই তারা এমনই গল্প শুনেছেন। কোন এক মহামারি গ্রামটিকে জনশূন্য করে দেয়। অনেকেই মারা যায়। কেই আর থাকেনা সেখানে । এখন শুধুই চাষাবাদ হয়। প্রায় সবই খাসজমি।

Nagad

তিনি আরো বলেন, গ্রামের ভিতর মানুষের চলাচলের সুবিধার্থে রাস্তা তৈরি করে দেয়া হয়েছে। সুপেয় পানির অভাব মেটাতে টিউবওয়েল পোতা হয়েছে। রাস্তায় সড়ক বাতি দেয়া হয়েছে যাতে মানুষের চলাচলে অসুবিধা না হয়। তারপরও মানুষের চলাচল খুবই কম। নিতান্ত প্রয়োজন ছাড়া মানুষ সেখানে যায় না।