চট্টগ্রামে চোখ রাঙাচ্ছে ডেঙ্গু

চট্টগ্রাম সংবাদদাতাচট্টগ্রাম সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ৩:৪৫ অপরাহ্ণ, জুন ৩, ২০২৩

চট্টগ্রামে ডেঙ্গুর প্রকোপ ক্রমেই বাড়ছে। সাধারণত জুলাই থেকে ডিসেম্বরে ডেঙ্গুর প্রকোপ শুরু হয়। কিন্তু চলতি বছর অনেকটা আগেই ডেঙ্গুর প্রকোপ ছড়িয়ে পড়েছে। রাজধানী ঢাকার মতো এবার চট্টগ্রামেও আগেভাগেই চোখ রাঙাচ্ছে ডেঙ্গু। প্রতিদিনই গড়ে ৬-৭ জন ভর্তি হচ্ছেন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে। স্বাস্থ্য বিভাগের নির্দেশনা পাওয়ার পর কিছু হাসপাতাল ডেঙ্গু কর্নারও খুলেছে।

এই প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক ডা. জাহিদ হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, আমাদের এখানে ডেঙ্গু রোগীদের জন্য একটা ব্লক আলাদা করে প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে। আমরা যতোটা বেশি পারছি সেবা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি।

চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্র জানায়, চট্টগ্রামে গত ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ মে পর্যন্ত পাঁচ মাসে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন ১৮২ জন। একই সময়ে ২০২২ সালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন ১৭ জন। চলতি বছর জানুয়ারিতে ৭৭ জন, ফেব্রুয়ারিতে ২২ জন, মার্চে ১২ জন, এপ্রিলে ১৮ জন এবং মে মাসে ৫৩ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এ সময় মারা গেছেন তিন জন। আক্রান্তদের ১১৯ জন নগরীর এবং ৬৩ জন বিভিন্ন উপজেলার। তাদের মধ্যে পুরুষ ৯৩ জন, নারী ৩৫ এবং শিশু ৫৪ জন।

চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্যানুযায়ী, চট্টগ্রামে গত ০১ জানুয়ারি থেকে ৩১ মে পর্যন্ত পাঁচ মাসে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন ১৮২ জন। একই সময়ে ২০২২ সালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন ১৭ জন।

চলতি বছর জানুয়ারিতে ৭৭ জন, ফেব্রুয়ারিতে ২২ জন, মার্চে ১২ জন, এপ্রিলে ১৮ জন এবং মে মাসে ৫৩ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এ সময় মারা গেছেন তিন জন। আক্রান্তদের ১১৯ জন নগরীর এবং ৬৩ জন বিভিন্ন উপজেলার। তাদের মধ্যে পুরুষ ৯৩ জন এবং নারী ৩৫ ও শিশু ৫৪ জন।

উপজেলাগুলোর মধ্যে সীতাকুণ্ডে সবচেয়ে বেশি ৩০ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন। এছাড়া সাতকানিয়া উপজেলায় ৫ জন, বাঁশখালী ও আনোয়ারা উপজেলায় ৪ জন করে, কর্ণফুলি ও রাউজান উপজেলায় ৩ জন, মীরসরাই, সন্দ্বীপ, রাঙ্গুনিয়া, হাটহাজারী, পটিয়া, লোহাগড়া উপজেলায় ২ জন করে এবং চন্দনাইশ, বোয়ালখালীতে ১ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত পাওয়া গেছে। তবে ফটিকছড়ি উপজেলায় এই রোগে আক্রান্ত কাউকে পাওয়া যায়নি।

Nagad

চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, কিছুদিন বেশ গরম পড়লেও ঘুর্ণিঝড়ের পর থেকে চট্টগ্রামে থেমে থেমে বৃষ্টি হয়েছে। আর থেমে থেমে বৃষ্টির কারণে বিভিন্ন পাত্রে (জায়গায়) পানি জমে মশার লার্ভার সৃষ্টি হচ্ছে। যেখানে এডিশ মশার প্রজনন (বংশ বিস্তার) ঘটছে। মূলত এই কারণে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়তে শুরু করেছে। তিনি আরও বলেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধের অন্যতম উপায় হচ্ছে মশার লার্ভা ধ্বংস করা, এডিস মশার বংশ বিস্তার রোধ করা। মোটকথা মশক নিধন কার্যক্রম ত্বরান্বিত করা। আর মশা নিধনের এই কাজ স্বাস্থ্য বিভাগের নয়। সিটি করপোরেশনের বিষয়টি দেখবে। স্বাস্থ্য বিভাগ মানুষের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখতে পারে।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ম্যালেরিয়া ও মশক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা মো: শরফুল ইসলাম মাহী গণমাধ্যমকে বলেন, বর্তমানে মশা নিধনে ক্র্যাশ প্রোগ্রাম অব্যাহত আছে। নগরীর অলি-গলি ও আবাসিক এলাকায় ওষুধ ছিটানো হচ্ছে। বর্তমানে মশা নিধনের ওষুধ হিসেবে ৪০ লিটার মাসকুবার এবং দুই হাজার লিটার অ্যাডাল্টিসাইড মজুত আছে। আরও ১৮ হাজার লিটার ওষুধ কেনার জন্য কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১৫ হাজার লিটার মশা ধ্বংসকারী অ্যাডাল্টিসাইড এবং লার্ভা ধ্বংসকারী তিন হাজার লিটার লার্ভিসাইড থাকবে।

চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহসান গণমাধ্যমকে বলেন, “ইতোমধ্যে এখানে বেশ কিছু ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। আমরা প্রস্তুত আছি। রোগী বাড়লে মেডিসিন ওয়ার্ডে তিনটি পৃথক ডেঙ্গু কর্নার করা হবে। শিশুদের শিশু ওয়ার্ডে চিকিৎসা দেওয়া হবে। বলা যায়, পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমাদের শতভাগ প্রস্তুতি রয়েছে।”

সারাদিন/০৩ জুন/এমবি