ফ্রান্সে টানা ষষ্ঠ দিনের মতো বিক্ষোভ চলছে

সারাদিন ডেস্কসারাদিন ডেস্ক
প্রকাশিত: ১:০৭ অপরাহ্ণ, জুলাই ৩, ২০২৩

ছবি- সংগৃহীত

নাহেল এম নামের এক অপ্রাপ্তবয়স্ক তরুণকে গুলিতে নিহতের ঘটনায় ফ্রান্সে টানা ষষ্ঠ দিনের মতো বিক্ষোভ চলছে। সাম্প্রতিক সময়ে দেশটিতে এটাই সবচেয়ে বড় সামাজিক প্রতিবাদ ও বিশৃঙ্খলা। এ সময়ে গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে বিক্ষোভকারীরা।

ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিস’সহ শহরগুলোয় শান্তি বজায় রাখতে ৪৫ হাজার পুলিশ সদস্য নামানো হয়েছে। গত শনিবার রাতে প্যারিসের এক মেয়রের বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটেছে।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, গত শনিবার (০১ জুলাই) রাত দেড়টার দিকে রাজধানী প্যারিসের উপশহর লিলেস রোজেসের মেয়র ও রক্ষণশীল দল লেস রিপাবলিকান পার্টির নেতা ভিনসেন্ট জিনব্রানের বাসভবনে হামলা চালায় বিক্ষোভকারীরা। এ সময় তারা বাইরে রাখা মেয়রের গাড়ি ভাঙচুর ও বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়। ভিনসেন্ট জিনব্রান সে সময় জরুরি বৈঠকের জন্য বাড়ির বাইরে অবস্থান করছিলেন। তিনি বলেন, বাড়িতে দুই সন্তানকে নিয়ে ঘুমিয়ে ছিলেন আমার স্ত্রী। মেয়রের স্ত্রীর পা ভেঙেছে বলে জানান তিনি।

এই অবস্থায় নিহত কিশোর নাহেলের নানি বা দিদিমা নাদিয়া বিবৃতি দিয়ে বলছেন, “অবিলম্বে এই সহিংসতা বন্ধ হোক।” তিনি বলেন, “কোনো গাড়ি, বাড়ি, স্কুল তো আপনাদের কোনো ক্ষতি করেনি। মনে রাখবেন, ওই বাসে করেই মায়েরা স্কুলে যান।”

নাদিয়া বলেন, নাতির হত্যায় তিনি ও তার মেয়ে বিপর্যস্ত। কিন্তু বিচারবিভাগের উপর তার আস্থা আছে। তিনি ন্যায় পাবেন।

প্যারিসে শান্তিরক্ষার জন্য ৭ হাজার পুলিশ নামানো হয়েছে। বিশেষ করে শহরের কেন্দ্রস্থলে প্রহরা বাড়ানো হয়েছে। কারণ সামাজিক মাধ্যমে বিক্ষোভকরীরা তাদের প্রতিবাদকে শহরের মাঝখানে নিয়ে যাওয়ার ডাক দিয়েছে।

Nagad

শনিবার পর্যন্ত সংঘর্ষে ২০০ বেশি পুলিশ অফিসার আহত হয়েছেন। শনিবার ৭০০ বেশি মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের বয়স ১৭ বছর বা তার কাছাকাছি।

গতকাল সন্ধ্যা ৬টা থেকে সোমবার (০৩ জুলাই) সকাল ৬টা পর্যন্ত প্যারিসের উপর ড্রোন দিয়ে নজরদারি করেছে পুলিশ। দাঙ্গাকারীদের চিহ্নিত করার জন্য এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তবে রোববার সন্ধ্যাবেলা প্যারিস তুলনামূলতভাবে শান্ত ছিল।

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট মাক্রোঁ রোরবার (০২ জুলাই) মন্ত্রীদের সাথে জরুরি বৈঠক করেন। তিনি এবার মন্ত্রী, মেয়র ও পার্লামেন্টের দুই সভার প্রেসিডেন্টকে নিয়ে বঠক করতে পারেন। মাক্রোঁর জার্মানি সফর করার কথা ছিল। কিন্তু ফ্রান্সের এই পরিস্থিতির কারণে তিনি সফর পিছিয়ে দিয়েছেন।

উল্লেখ্য, গত ২৭ জুন (মঙ্গলবার) ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের উপশহর নানতেরে ট্রাফিক আইন অমান্যের অভিযোগে নাহেল এম নামের এক অপ্রাপ্তবয়স্ক তরুণকে গাড়ি থামাতে বলেছিল পুলিশ; কিন্তু নাহেল সেই নির্দেশ না মানায় এক পুলিশ সদস্য তাকে লক্ষ্য করে গুলি করে এবং তাতে ঘটনাস্থলেই নিহত হয় নাহেল।

তার মৃত্যুর পর থেকেই বিক্ষোভ দানা বাঁধছিল নানতেরে। এই দিন বিকেলের দিকে নাহেলের মা মৌনিয়া এক ভিডিওতে তার ছেলেকে হত্যাকারী পুলিশ সদস্যের বিচার দাবি করেন। ফ্রান্সের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তা ভাইরাল হয়ে যায়। তার ওই ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর দেশজুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়। নাহেল ও তার মা আলজেরীয় বংশোদ্ভুত এবং মুসলিম।

সারাদিন/০৩ জুলাই/এমবি