বনবিভাগের অফিসে হামলার কথা স্বীকার জেলেদের!

বাগেরহাট (মোংলা প্রতিনিধি):বাগেরহাট (মোংলা প্রতিনিধি):
প্রকাশিত: ১:০২ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২৫, ২০২৩

নিয়ম বহি:ভূত ভাবে কাঁকড়া আহরণ ও পরিবহন অভিযোগের দায়ে আটকের পর মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পেয়েছেন জেলেরা। বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) বিকালে সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জ কার্যালয় এ মুচলেকা দেন জেলেরা।

এর আগে বুধবার (২১ নভেম্বর) মঙ্গলবার ভোরে নিয়ম বহি:ভূত ভাবে কাঁকড়া আহরণ ও পরিবহন অভিযোগের দায়ে একটি ইঞ্জিন চালিত ট্রলার ও ৫টি নৌকায় থাকা ৮০ ক্যারেট কাঁকড়াসহ ২৫ জেলেকে আটক করে বন বিভাগ। পরে রাত সাড়ে ৭টার দিকে সুন্দরবনের পূর্ব বন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জ অফিসে হামলা করে ১৯ জেলেকে ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ওঠে ইসমাইল হোসেন ওরফে লিটন গাজীর বিরুদ্ধে।

এদিকে গত বুধবার (২২ নভেম্বর) দুপুরে মোংলা প্রেস ক্লাবে জেলেদের মারধরসহ আহরিত ২০লাখ টাকার কাঁকড়া ছিনিয়ে নেয়ার অভিযোগ তুলে বনরক্ষীদের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেন জেলেরা। একই সঙ্গে চাঁদা চাওয়া, নদীতে জেলেদের নৌকায় হামলা ভাংচুরসহ ৬ জেলেকে আটক করা এবং এ ঘটনায় ২জেলে নিখোঁজ রয়েছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে দাবী করেন জেলেরা।

মুচলেকা দেওয়ার সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ইসমাইল গাজী লিটন বলেন, বন বিভাগ আমাদের কোন প্রকার মারধোর করেনি, চাঁদাও চায়নি এবং কাকড়াও ছিনিয়ে নেয়নি, তারা অবৈধ ভেবে কাঁকড়া আটক করছিলো। ২জেলে নিখোঁজের বিষয় লিটন বলেন, তারা এক আত্মীয়র বাড়িতে গেছিলো। বনবিভাগের সাথে আমাদের ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে, ভুল লোকে আমাদের ভুল বুঝিয়েছে। এখন আমরা আমাদের নিখোঁজ হওয়া লোক, কাঁকড়া, নৌকাসহ সকল মালামাল বুঝে পেয়েছি।

বন বিভাগের কার্যালয়ে সন্ত্রাসী হামলার কথা স্বীকার করে ইসমাইল হোসেন ওরফে লিটন গাজী বলেন, না বুঝে ভয়ে এটা করেছি। তোদের চালান দেবে, এটা করবে, সেটা করবে বলে জেলেদের ভুল বুঝিয়েছে। ভুল বুঝিয়ে এসব করিয়েছে। মূর্খ মানুষ আমরা। না বুঝে করেছি। আমরা ভুল স্বীকার করছি। এ ধরণের ভুল আমাদের আর হবে না।

চিলা ইউপি চেয়ারম্যান গাজী আকবর হোসেন বলেন, জেলেরা অন্যায় করছে। পাস পারমিটের যে নিয়ম আছে জেলেরা সেইটা করে নাই বিধায় বনবিভাগ তাদের আটক করে। পরে বিভিন্ন লোকে জেলেদের বুঝায় যে তোদের কাঁকড়াও দেবেনা ট্রলারও দেবেনা তোদের চালান দেবে এই ভয়ে কিছু জেলেরা ভেঙ্গে চুরে চলে গিয়েছিলো। জেলেদের অপরাধ হয়েছে বিধায় বিভাগীয় বন কর্মকর্তার সহায়তায় সিআরও করে জেলেদের যা কিছু আছে আমি থেকে তাদের হাতে বুঝিয়ে দিয়েছি। নিখোঁজ দুই জেলেসহ সবাইকে আমি লিটনের হাতে বুঝিয়ে দেই।

Nagad

চাঁদপাই ফরেস্ট অফিসের এসও মোঃ আনিসুর রহমান বলেন, জেলেরা প্রথমবারের মত তাদের দোষ স্বীকার করে বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কাছে সিওআরের জন্য দরখাস্ত করে। সেই প্রক্রিয়ায় জরিমানা করে এদের মালামাল সহ তাদের বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জরিমানা নির্ধারণ করবেন। আমরা ২০জন জেলের নামে মোংলা থানায় একটি অভিযোগ করেছি তদন্ত করে তারা আইনানুগ ব্যবস্থা নিবেন।

মংলা থানার সেকেন্ড অফিসার জাকির হোসেন জানান, জেলেরা তাদের পাস দুবলায় জমা না দেয়াসহ কাঁকড়া পরিবহণে অবৈধভাবে ইঞ্জিন চালিত নৌকা ট্রলার, নৌকা ও কাঁকড়া জব্দ করা হয়েছিলো। সিওআরের প্রক্রিয়ায় তাদের মুক্ত করা হচ্ছে।