মোদির বিতর্কিত পোস্ট: মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস উপস্থাপন করল বাংলাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক:নিজস্ব প্রতিবেদক:
প্রকাশিত: ৮:২৮ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৮, ২০২৪

বিজয় দিবসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির একটি বিতর্কিত পোস্টের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে ‘ইতিহাসের তথ্য’ শিরোনামে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস তুলে ধরে।

‘ইতিহাসের তথ্য’ শিরোনামে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দীর্ঘ সংগ্রাম এবং ৯ মাসব্যাপী নৃশংস যুদ্ধ সহ্য করে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ একটি সার্বভৌম স্বাধীন দেশ হিসেবে আবির্ভূত হয়। ‘লিবারেশন অ্যান্ড বিয়ন্ড : ইন্দো-বাংলাদেশ রিলেশন্স’ শিরোনামে তার বইয়ে, প্রাক্তন ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিব, কূটনীতিক এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা প্রয়াত জেএন দীক্ষিত লিখেছেন, ‘আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে ভারতীয় সামরিক হাইকমান্ডের একটি বড় রাজনৈতিক ভুল ছিল যৌথ কমান্ডের বাংলাদেশ পক্ষের কমান্ডার জেনারেল এমএজি ওসমানির উপস্থিতি নিশ্চিত এবং স্বাক্ষরকারী করতে ব্যর্থতা।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, তার অনুপস্থিতির আনুষ্ঠানিক অজুহাত ছিল যে তার হেলিকপ্টারটি উড্ডয়ন করেছিল কিন্তু আত্মসমর্পণের সময়সূচির অনুযায়ী সময়মতো ঢাকায় পৌঁছাতে পারেনি। কিন্তু ব্যাপক সন্দেহ ছিল যে তার হেলিকপ্টারটি ভুল পথে পাঠানো হয়েছিল যাতে তিনি সময়মতো ঢাকায় পৌঁছাতে না পারেন এবং অনুষ্ঠানে মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দু ভারতীয় সামরিক কমান্ডারদের ওপর নিবদ্ধ হয়। এটি একটি দুর্ভাগ্যজনক বিচ্যুতি ছিল যা ভারত এড়াতে পারতো। এই ঘটনা বাংলাদেশের রাজনৈতিক মহলের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষের সৃষ্টি করে। আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে ওসমানির উপস্থিতি বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রথম দিনগুলোতে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ককে প্রভাবিত করে এমন অনেক রাজনৈতিক ভুল বোঝাবুঝি এড়াতে সাহায্য করতে পারতো।

বিবৃ‌তিতে উ‌ল্লেখ করা হয়, আমরা ১৯৭১ সালে আমাদের গৌরবময় বিজয় উদযাপন করি, আমরা সত্য উদযাপন করি।

গত সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) নরেন্দ্র মোদি নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ ও এক্স হ্যান্ডেলে লিখেন, “আজ, বিজয় দিবসে, ১৯৭১ সালে ভারতের ঐতিহাসিক বিজয়ে অবদান রাখা সাহসী সেনাদের সাহস ও আত্মত্যাগকে আমরা সম্মান জানাই। তাদের নিঃস্বার্থ আত্মোৎসর্গ ও অটল সংকল্প আমাদের জাতিকে রক্ষা করেছে এবং আমাদের গৌরব এনে দিয়েছে।”

Nagad

মোদির পোস্টে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ এবং সেই যুদ্ধের মর্মমূলকে উপেক্ষা করে একাত্তরের বিজয়কে একমাত্র ‘ভারতের ঐতিহাসিক বিজয়’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। পোস্টটি বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে।