গাজায় সহায়তা কেন্দ্রের কাছে ইসরায়েলি হামলায় নিহত অর্ধশতাধিক, আহত শতাধিক
গাজায় ত্রাণ নেওয়ার সময় ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে অর্ধশতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন শতাধিক মানুষ। খান ইউনিসের পূর্ব সড়কে মঙ্গলবার (১৭ জুন) সকালে এই ঘটনা ঘটে।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয় জানায়, গুলিতে অন্তত ৫১ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক, ফলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আহতদের নাসের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। খবর আলজাজিরা।


গাজা সিভিল ডিফেন্সের মুখপাত্র মাহমুদ বাসসাল জানান, ইসরায়েলি ড্রোন প্রথমে গুলি চালায়, পরে ট্যাংক থেকে শেল ছোড়া হয়। এতে বহু মানুষ নিহত ও আহত হন। তিনি বলেন, “লোকজন খাদ্য, বিশেষ করে ময়দা পাওয়ার আশায় ভিড় করেছিলেন।”
ইসরায়েলের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা ভয়াবহ দৃশ্যের বর্ণনা দিয়েছেন। ৩৮ বছর বয়সী সাঈদ আবু লিবা বলেন, “ডজন ডজন বেসামরিক মানুষ, শিশুদেরও, হত্যা করা হয়েছে। কেউ কারো পাশে দাঁড়াতে পারেনি।” ইউসুফ নোফাল এই ঘটনাকে “নির্মম গণহত্যা” বলে উল্লেখ করেন।
আল জাজিরার গাজা প্রতিনিধি তারেক আবু আজজুম জানান, নাসের হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, অনেক মরদেহ এতটাই ছিন্নবিচ্ছিন্ন যে শনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছে না।
ঘটনাটি গত তিন সপ্তাহে গাজায় গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন (GHF)-এর মাধ্যমে চাল বিতরণের সময় ইসরায়েলি হামলার ধারাবাহিকতা। ফাউন্ডেশনটি ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনে কার্যক্রম চালালেও জাতিসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক মানবিক সংস্থা এতে অংশ নেয়নি। তারা GHF-কে নিরপেক্ষতা ও মানবিক নীতিমালা ভঙ্গ করার অভিযোগে প্রত্যাখ্যান করেছে।
জিএইচএফ-এর চাল বিতরণ কেন্দ্র ঘিরে এখন পর্যন্ত তিন শতাধিক মানুষ নিহত এবং দুই হাজারের বেশি আহত হয়েছেন বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনার ভলকার তুর্ক বলেন, “ত্রাণ পেতে গিয়ে বেসামরিক মানুষের উপর এমন প্রাণঘাতী হামলার ঘটনায় অবিলম্বে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।”