বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগের সকল কার্যক্রম নিষিদ্ধ

নিজস্ব প্রতিবেদক:নিজস্ব প্রতিবেদক:
প্রকাশিত: ৫:৫৪ অপরাহ্ণ, মে ১২, ২০২৫

আওয়ামী লীগ এবং এর সব অঙ্গ, সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের রাজনৈতিক কার্যক্রম বিচার সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন সোমবার (১২ মে) বিকেলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে জারি করা হয়। এতে স্বাক্ষর করেন বিভাগের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি সরকার গঠন থেকে শুরু করে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সারা দেশে সন্ত্রাস, নির্যাতন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের মাধ্যমে এক ত্রাসের পরিবেশ সৃষ্টি করে। দলটির বিরুদ্ধে গুম, খুন, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ, লুণ্ঠন, বেআইনি আটক, ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ দেশি-বিদেশি প্রতিবেদনেও প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

এছাড়া ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট ২০২৪ পর্যন্ত ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনেও মানবতাবিরোধী ও রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে দলটির বিরুদ্ধে। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ও দেশের বিভিন্ন আদালতে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা বিচারাধীন রয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে দলটির নেতাকর্মীরা বিচার প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার উদ্দেশ্যে দেশব্যাপী মিছিল, উসকানিমূলক বক্তব্য, ভিনদেশে পলাতক নেতাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপপ্রচার, রাষ্ট্রবিরোধী লিফলেট বিতরণসহ বিভিন্ন তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে—যা রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব ও জননিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ।

সরকার মনে করে, এসব তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে সন্ত্রাসবিরোধী আইন, ২০০৯ এবং সংশোধিত সন্ত্রাসবিরোধী অধ্যাদেশ, ২০২৫-এর আওতায় দলটির সমস্ত কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করা যুক্তিসংগত।

Nagad

তাই বিচারকার্য সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগ এবং এর অধীনস্থ সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে কোনো সভা-সমাবেশ, প্রচার, অনলাইন বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কার্যক্রম, কিংবা গণমাধ্যমে উপস্থিতি সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। প্রজ্ঞাপনটি রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে অবিলম্বে কার্যকর হবে।

এর আগে গত ১০ মে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বৈঠক শেষে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল জানান, বিচার সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগের যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।