স্ত্রী হত্যা মামলায় ১৬ বছর ধরে পলাতক উজ্জ্বল প্রামাণিক গ্রেপ্তার

সারাদিন ডেস্কসারাদিন ডেস্ক
প্রকাশিত: ৬:২৫ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ৭, ২০২২

সংগৃহীত

স্ত্রী হত্যা মামলায় ১৬ বছর ধরে পলাতক মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি উজ্জ্বল প্রামাণিককে (৪০) গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব-৩)। মঙ্গলবার (০৬ সেপ্টেম্বর) রাতে ঢাকার আশুলিয়া থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

বুধবার (০৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাব-৩-এর পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ এই কথা জানান।

দীর্ঘ ১৬ বছরে উজ্জ্বল প্রামাণিক পুনরায় বিয়ে করে স্ত্রী-সন্তানসহ গাজীপুর ও আশুলিয়ায় বসবাস করে আসছিলেন।

ঘটনার বিবরণে র‍্যাবের এই কর্মকর্তা জানান, বগুড়া সদর থানাধীন কৈচড় দক্ষিণপাড়া গ্রামের বাসিন্দা উজ্জ্বল প্রামাণিকের সাথে ২০০৬ সালের জুন মাসে ভিকটিম আলো বেগমের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের দিন উজ্জ্বল প্রামাণিক ও তার পরিবারকে নগদ ৩০ হাজার টাকা যৌতুক দেওয়া হয়। বিয়ের পর বিদেশ যাওয়ার জন্য স্ত্রীর কাছে আরও ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন উজ্জ্বল। এই অবস্থায় পারিবারিক সালিশে যৌতুক বাবদ আরও ৫০ হাজার টাকা দিতে বিভিন্নভাবে চাপ প্রয়োগ করা হয়। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে উজ্জ্বল প্রামাণিক ও তার পরিবার আলো বেগমকে তালাক দেবে বলে ভয় দেখাতে থাকে। উজ্জ্বল ও তার পরিবার ভিকটিম আলো বেগমকে বিভিন্নভাবে নির্যাতন করে।

আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ আরও জানান, ২০০৬ সালের ০১ আগস্ট উজ্জ্বলের ভগ্নিপতি নাজমুল হোসেন লাবু ভিকটিম আলো বেগমের পরিবারকে ফোনে জানায়, ভিকটিম আলো বেগম গুরুতর অসুস্থ। এরপর ভিকটিমের পরিবারের লোকজন উজ্জ্বলের বাড়িতে গিয়ে ঘরের মেঝেতে ভিকটিম আলো বেগমের লাশ দেখতে পায়। এই ঘটনায় উজ্জ্বল প্রামাণিককে প্রধান আসামি করে ৫ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা করা হয়। আসামি উজ্জ্বল প্রামাণিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় গত ২৪ জুলাই তার মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত। অন্যান্য চার আসামিকে খালাস দেওয়া হয়।

র‍্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, স্ত্রীকে হত্যার পর উজ্জ্বল প্রামাণিক তার মা আলেয়াকে নিয়ে গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে গাজীপুর চৌরাস্তা এলাকায় এসে পরিচয় গোপন রেখে বসবাস শুরু করেন। ছয় মাস পর নাছিমা খাতুন নামে একজনকে বিয়ে করে গাজীপুরে বসবাস করে আসছিলেন। তাদের ১০ বছর ও তিন বছর বয়সী দুটি ছেলে সন্তান রয়েছে।

Nagad

উজ্জ্বল পালিয়ে আসার পর থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত বগুড়ায় নিজ বাড়ি ও তার আত্মীয়-স্বজনের সাথে সব প্রকার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রেখে গাজীপুরে আত্মগোপনে ছিলেন। কিছুদিন আগে তিনি এক আত্মীয়ের মাধ্যমে জানতে পারেন তার মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা হয়েছে। এরপর থেকে তিনি ঢাকার আশুলিয়ায় সপরিবারে একটি ভাড়া বাসায় বসবাস শুরু করেন।

গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে দীর্ঘ ১৬ বছর পর আশুলিয়ায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে উজ্জ্ব লকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানায় র‍্যাব।

সারাদিন/০৭ সেপ্টেম্বর/এমবি