পরপর ৪ কন্যাসন্তান হওয়ায় নির্যাতনে অভিযোগ, গৃহবধূর আত্মহত্যা
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে ছেলে সন্তানের আশায় পরপর চারটি কন্যাসন্তান হওয়ায় শিপা বেগম ও সুমন মিয়ার দাম্পত্যজীবনে কলহ দেখা দেয়। দিন দিন স্বামীর নির্যাতন বাড়তে থাকায় বিষপানে আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছেন স্ত্রী বলে অভিযোগ উঠেছে।
শুক্রবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে জগন্নাথপুর উপজেলার মিরপুর ইউনিয়নের বড়কাপন গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।
নিহত শিপা বেগম (২৯) ওই গ্রামের সুমন মিয়ার স্ত্রী।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, ১০ বছর আগে জগন্নাথপুর পৌরসভার ইকড়ছই এলাকার মকদ্দুছ মিয়ার মেয়ে শিপার সাথে বড়কাপন গ্রামের আব্দুল হামিদ মিয়ার ছেলে সুমনের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। দাম্পত্যজীবন সুখেরই ছিল। বিয়ের প্রথম বছরেই তাদের প্রথম কন্যাসন্তানের জন্ম হয়। কিন্তু দ্বিতীয়বারও কন্যাসন্তানের জন্ম হওয়ার পর সুখের সংসারে আগুন লাগে। একটি ছেলের আশায় আরও দুটি সন্তান নেন তারা। কিন্তু সে দুটিও কন্যা। একে একে চার কন্যাসন্তানের জন্ম হওয়ায় স্ত্রীর ওপর ক্ষিপ্ত হন সুমন। প্রায়ই স্ত্রীকে শারীরিক নির্যাতন করতেন।
এ পরিস্থিতিতে জামাইকে সন্তুষ্ট রাখতে বছরখানেক আগে শিপার মা মনু বেগম তার সৌদিপ্রবাসী মেয়ের কাছ থেকে ২ লাখ টাকা ধার করে সুমনকে দেন। মাসখানেক আগে সেই টাকা ফেরত চাইলে সুমন মিয়া আরও আগ্রাসী হয়ে ওঠেন। নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে গেলে গতকাল বিকেলে শিপা বিষপান করেন। পরিবারের লোকজন তাকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্মরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
শিপার মা মনু বেগম গণমাধ্যমকে বলেন, “কন্যাসন্তান জন্ম দেওয়া ছিল আমার মেয়ের অপরাধ। ছেলেসন্তান হয় না বলে প্রায়ই আমার মেয়েকে নির্যাতন করত তার স্বামী। মেয়ের সুখের জন্য জামাইকে ব্যবসার কাজে ২ লাখ টাকা ধার দেই। আর সেই টাকা চাওয়াতে আমার মেয়েকে নির্যাতন করত শ্বশুরবাড়ির লোকজন। তার মৃত্যুর জন্য তারাই দায়ী। আমি তাদের বিচার চাই।”
জগন্নাথপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, “শিপা বেগমের লাশ সিলেট হাসপাতালে রয়েছে। সেখানে ময়নাতদন্ত করা হবে। অভিযোগের ভিত্তিতে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
সারাদিন/১৭ সেপ্টেম্বর/এমবি