সংকটে মানবজাতি, অর্ধেকের বেশি কমেছে শুক্রাণু: গবেষণা

সারাদিন ডেস্কসারাদিন ডেস্ক
প্রকাশিত: ২:৩৫ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২২, ২০২২

ছবি- সংগৃহীত

বিশ্বজুড়ে অর্ধেকের বেশি কমেছে পুরুষের শুক্রাণু। এখনই শুক্রাণু কমার প্রতিরোধে ব্যবস্থা না নিলে শিগগিরই মানবজাতি প্রজনন সংকটের মুখোমুখি হতে পারে।

সম্প্রতি এ নিয়ে একটি গবেষণা নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক একটি সাময়িকীতে। সেখানেই একদল গবেষক বিষয়টি তুলে ধরেছেন। গবেষকরা বলেন, পুরুষের শুক্রাণুর হার কমা রোধে এখনই পদক্ষেপ নেওয়া না হলে মানবজাতি সন্তান জন্মদানে সংকটে পড়বে।

‘হিউম্যান রিপ্রোডাকশন আপডেট’ নামে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সাময়িকীতে গবেষণা নিবন্ধটি প্রকাশিত হয়েছে। নিজেদের শুক্রাণু উৎপাদনক্ষমতার বিষয়টি নিয়ে সচেতন ছিলেন না, এমন ১৫৩ জন পুরুষের শুক্রাণু নিয়ে গবেষণাটি করা হয়েছে।

ওই গবেষণায় দেখা গেছে, ‘১৯৭৩ সাল থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে’ শুক্রাণুর ঘনত্ব গড়ে ৫১ দশমিক ৬ শতাংশ কমেছে। এছাড়া একই সময়ের মধ্যে (৪৫ বছর) শুক্রাণুর হার কমেছে ৬২ দশমিক ৩ শতাংশ।

এই গবেষকেরাই ২০১৭ সালে শুক্রাণুর হার নিয়ে একটি গবেষণা করেছিলেন। ওই গবেষণায় দেখা গেছে, গত চার দশকে পুরুষের শুক্রাণুর হার কমে অর্ধেকে নেমে এসেছে। তবে বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলের তথ্য-উপাত্ত না থাকায় ওই গবেষণাটির ফল শুধু ইউরোপ, উত্তর আমেরিকা ও অস্ট্রেলিয়ার ওপর ভিত্তি করে তৈরি বলে সেবার সমালোচিত হয়েছিল।

তবে এবার গবেষকেরা ৫৩টি দেশের পুরুষদের শুক্রাণু নিয়ে গবেষণা করেছেন। ইউরোপ, উত্তর আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া ছাড়াও মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকা, আফ্রিকা ও এশিয়ার দেশগুলোর পুরুষদের শুক্রাণু কমার বিষয়টি এবার উঠে এসেছে।

Nagad

সব মহাদেশের ১৯৭২ সাল থেকে পাওয়া তথ্য বলছে, শুক্রাণুর ঘনত্ব প্রতি বছর ১ দশমিক ১৬ শতাংশ করে কমছে; ২০০০ সাল থেকে কমার এই হার বছরপ্রতি ২ দশমিক ৬৪ শতাংশ করে। আগের বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, শুক্রাণুর ঘনত্ব প্রতি মিলিলিটারে ৪০ মিলিয়নের নিচে নেমে এলে প্রজনন সক্ষমতা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

গবেষক দলের সদস্য, জেরুজালেমের হিব্রু বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হাজাই লেভিন বলেছেন, “এ ব্যাপারে আমাদের কিছু করা দরকার। হ্যাঁ, আমার মনে হয় এটি একটি সংকট, যা এখনই মোকাবেলা করা উচিত, কেননা পরে এটি এমন জায়গায় চলে যেতে পারে, যেখান থেকে আর ফেরার কোনো পথ থাকবে না।”

সর্বশেষ গবেষণায় ২০১৮ সালে গড় শুক্রাণু ঘনত্ব প্রতি মিলিলিটারে ৪৯ মিলিয়ন দেখা গেছে। লেভিন বলছেন, এটা গড় হিসাব; অর্থ্যাৎ, অসংখ্য পুরুষের শুক্রাণু ঘনত্ব এখনই প্রতি মিলিলিটারে ৪০ মিলিয়নের নিচে, এবং এই সংখ্যা প্রতিনিয়তই বাড়ছে।

অধ্যাপক হাজাই লেভিন বলেছেন, “কমার এই হার স্পষ্টতই বিশ্বের জনসংখ্যার প্রজনন ক্ষমতা হ্রাসেরই প্রতিনিধিত্ব করছে।”

কিন্তু শুক্রাণু কমছে কেন?

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ধূমপান, মদ্যপান, স্থূলতা ও পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ খাবার না খাওয়ায় পুরুষের শুক্রাণুর হার কমতে পারে। স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন শুক্রাণুর উৎপাদনক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করতে পারে।
আবার কারও অনুমান, অন্তস্রাব-বিঘ্নিত রাসায়নিক বা অন্যান্য পরিবেশগত বিষয় এখানে ভূমিকা রাখছে।

সারাদিন/২২ নভেম্বর/এমবি