অক্টোবরেই থার্ড টার্মিনাল উদ্বোধন করা হবে : বিমান প্রতিমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক:নিজস্ব প্রতিবেদক:
প্রকাশিত: ৭:০৭ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ৭, ২০২৩

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী বলেছেন, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালের কাজ ইতোমধ্যে ৬০ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে। অত্যন্ত দৃষ্টি নন্দন এই টার্মিনাল ভবন এখন দৃশ্যমান।
তিনি বলেন, এ বছরের অক্টোবরেই থার্ড টার্মিনাল উদ্বোধন করা হবে।

আজ মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বর্তমান ১ ও ২ নং টার্মিনালের যাত্রীসেবা ও বিভিন্ন কার্যক্রম এবং থার্ড টার্মিনালের নির্মাণ কাজের অগ্রগতি পরিদর্শন শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিমন্ত্রী এ কথা বলেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে টার্মিনাল ভবনের অভ্যন্তরীণ সাজসজ্জা এবং বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রপাতি স্থাপনের কাজ চলছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী যাত্রীসেবা বৃদ্ধি ও নিরাপদ বিমান পরিচালনা নিশ্চিতে বাংলাদেশের সকল বিমানবন্দরে রানওয়ের শক্তি বৃদ্ধিকরণ, নতুন টার্মিনাল ভবন নির্মাণ, নিরাপত্তা ব্যবস্থা আধুনিকায়নসহ বিভিন্ন ধরনের উন্নয়ন কাজ চলমান রয়েছে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, বর্তমান টার্মিনালের অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতার জন্য যাত্রীদের কাঙ্খিত মানে সেবা প্রদান করতে না পারলেও সেবার মান উন্নয়নে আমাদের সার্বক্ষণিক প্রচেষ্টা রয়েছে। বিমানবন্দরের কোথাও যেন কোন যাত্রীর হয়রানির শিকার হতে না হয় সেজন্য মন্ত্রণালয় এবং বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ প্রতিনিয়ত বর্তমান টার্মিনালের কার্যক্রম মনিটরিং করছে। থার্ড টার্মিনাল উদ্বোধনের পর অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতা দূর হওয়ায় যাত্রীরা আন্তর্জাতিক মানের সেবা পাবেন।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রানওয়ের ইন্সট্রুমেন্টাল ল্যান্ডিং সিস্টেমকে (আইএলএস) ক্যাটাগরি-১ থেকে ক্যাটাগরি-২ এ উন্নীত করণের কাজ চলমান থাকায় বর্তমানে রাতে পাঁচ ঘন্টা এই বিমানবন্দরে বিমান চলাচল বন্ধ থাকছে।

তিনি বলেন, ‘থার্ড টার্মিনাল চালু করা জাতির প্রত্যাশা ছিল। বিমানবন্দর একটি স্বাধীন দেশের গেটওয়ে। বিদেশ থেকে যেসব পর্যটকরা বাংলাদেশে আসবেন, তারা যেন বিমানবন্দরে প্রবেশ করেই দেশের উন্নয়নের বিষয়ে ধারণা নিতে পারেন। আমাদের মেট্রোরেল ও পদ্মা সেতু চালু হয়েছে। পাতাল রেলের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে। এখন সারাবিশ্ব বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালের দিকে তাকিয়ে আছে।’

Nagad

দেশের এভিয়েশন খাতে নীরব বিল্পব চলছে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সিলেট আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে টার্মিনাল নির্মাণ চলছে। কক্সবাজার বিমানবন্দরের রানওয়ে বর্ধিতকরণসহ ব্যাপক উন্নয়ন কাজ চলছে। এছাড়া চট্টগ্রাম, সৈয়দপুর ও যশোর বিমানবন্দরে উন্নয়ন কাজ চলছে। বহরে নতুন উড়োজাহাজ সংযুক্ত করা হচ্ছে।’

সংবাদ সম্মেলনে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মুফিদুর রহমান বলেন, ‘এ প্রকল্পে আমাদের কিছু সাশ্রয় হয়েছে, প্রায় ৭০০ কোটি টাকা। এ কারণে আমরা কিছু অ্যাডিশনাল কাজ যুক্ত করেছি, সেজন্য একটু সময় লাগবে। তবে আমরা টার্মিনাল ফেলে রাখব না। আমাদের ইক্যুইপমেন্টগুলো পুরোপুরি কার্যকর হতে সময় লাগবে। এখানে আমাদের বিমান অপারেটিং সংক্রান্ত কাজগুলো সম্পন্ন হয়ে গেছে।’

প্রকল্পে অর্থ সাশ্রয় হওয়ায় অতিরিক্ত আর কী কী কাজ করা হবে, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘যে টার্মিনাল হওয়ার কথা ছিল ১২টি বোর্ডিং ব্রিজ নিয়ে, সেই জায়গায় পুরো কাজ সম্পন্ন হলে ২৬টি বোর্ডিং ব্রিজ হবে। এতে আমাদের সক্ষমতা বাড়বে। যেখানে ১২ মিলিয়ন যাত্রী হওয়ার কথা, সেখানে আরও ১৬ মিলিয়ন যাত্রী আমরা অতিরিক্ত নিতে পারব। রানওয়ের পশ্চিম পাশে আরেকটি ভিভিআইপি টার্মিনাল নির্মাণ করা হবে। ধাপে-ধাপে আমরা এই টার্মিনালের কাজ সম্পন্ন করব।’

অপর এক প্রশ্নের জবাবে মাহবুব আলী বলেন, আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল সংস্থার রুলস ও রেগুলেশনে পরিবর্তন আসায় সেই অনুযায়ী সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের উন্নয়ন কাজের ডিজাইন পরিবর্তন করতে হওয়ায় এই কাজে একটু দেরি হচ্ছে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিমানবন্দরের ই-গেইটগুলো চালু আছে। তবে এর সাথে বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কিত থাকায় এগুলো শতভাগ চালু করতে আরও কিছুটা সময় লাগবে। অন-অ্যারাইভাল ভিসার বিষয়ে আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলেছি। ইতোমধ্যেই তাঁরা এ বিষয়ে কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন।

বিমানবন্দর পরিদর্শনকালে বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোকাম্মেল হোসেন, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মুফিদুর রহমান, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলামসহ মন্ত্রণালয়, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ ও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।