রোহিঙ্গাদের ভাষানচরে স্থানান্তরে জাতিসংঘের সহায়তা চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী

সারাদিন ডেস্কসারাদিন ডেস্ক
প্রকাশিত: ৫:৪৩ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২৩

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের আরো উন্নত ভাষানচরে স্থানান্তর করতে বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারি গুয়েন লুইসের সহায়তা চেয়েছেন।

আজ (২০ ফেব্রুয়ারি) সকালে গুয়েন লুইস প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবনে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে এলে শেখ হাসিনা এ আহ্বান জানান।

প্রধানমন্ত্রীর স্পীচ রাইটার এম. নজরুল ইসলাম প্রধানমন্ত্রীর উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছেন, ‘শেখ হাসিনা বলেছেন, যেহেতু খুব শিগগির রোহিঙ্গাদের তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর কোনো নিশ্চয়তা নেই, তাই রোহিঙ্গাদের আরো উন্নত ভাষানচরে স্থানান্তর করা উচিত এবং জাতিসংঘ বিষয়ে সহযোগিতা করতে পারে।’বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর স্পীচ রাইটার এম. নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, রোহিঙ্গারা বর্তমানে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ঘনবসতিপূর্ণ জীবনযাপন করছেন। যদি রোহিঙ্গাদের বসবাসের জন্য জীবিকার ব্যবস্থা সম্পন্ন ভাষানচরে স্থানান্তর করা যায় করা যায়, তাহলে তারা বসবাসযোগ্য পরিবেশে মর্যাদাপূর্ণ জীবনযাপন করতে পারবেন। কারণ, এখানে লাখেরও বেশি লোকের আবাসনের ব্যবস্থা রয়েছে’।

শেখ হাসিনা আরো বলেন, ভাষানচরে উন্নতমানের জীবন যাপন ও রোহিঙ্গা শিশুদের নিজস্ব ভাষায় শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। মানবিক কারণে বিপূল সংখ্যক রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে আশ্রয় দেওয়া হলেও তারা এখন বাংলাদেশের জন্য বড় ধরণের বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়ার পর থেকে সহযোগিতার জন্য জাতিসংঘকে ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী এবং জাতিসংঘ এ সহায়তা অব্যাহত রাখবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

Nagad

বৈঠকে শেখ হাসিনা বলেন, রোহিঙ্গারা কক্সবাজারে সামাজিক সমস্যা সৃষ্টি করছে। তাদের মধ্যে অনেকেই মাদক, অস্ত্র ও মানব পাচারে জড়িয়ে পড়েছে। তিনি আরো বলেন, রোহিঙ্গারা অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব এবং জঙ্গিবাদেও জড়িত। কক্সবাজারে রোহিঙ্গারা স্থানীয়দের চেয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠে পরিণত হয়েছে।

বৈঠকে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে নারীর ক্ষমতায়ন ও নারী শিক্ষা নিশ্চিত করার পাশাপাশি এমডিজি’র লক্ষ্য অর্জন ও এসডিজি অর্জনে কাজ করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অগ্রগতির ভূয়সী প্রশংসা করেন।

গুয়েন লুইস আরও বলেন, বাংলাদেশকে জলবায়ু পরিবর্তন ও কোভিড-১৯ পরবর্তী পরিস্থিতিতে নারীদের শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতসহ কিছু চ্যালেঞ্জ কাটিয়ে উঠতে হবে। জাতিসংঘ অতীতেও বাংলাদেশের পাশে ছিল এবং ভবিষ্যতেও বাংলাদেশের পাশে থাকবে।’

জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় পদক্ষেপ সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা বাংলাদেশকে জলবায়ু সহিষ্ণু করতে এর আগে অভিযোজন ও প্রশমন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলার ব্যবস্থা হিসেবে বাংলাদেশ উপকূলীয় অঞ্চল ও সবুজ বেস্টনি জলবায়ু সহিষ্ণু আবাসন নির্মাণ করছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ নিজস্ব অর্থায়নে ‘ক্লাইমেট ট্রাস্ট ফান্ড’ গঠন করেছে। তবে তিনি জলবায়ু প্রতিশ্রুতি নিয়ে ধনী দেশগুলোর কর্মকান্ডে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। ধনী দেশগুলো শুধু প্রতিশ্রুতিই দিচ্ছে, কিন্তু তারা সেগুলো পালন করছে না।’

এসময় প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

সারাদিন. ২০ ফেব্রুয়ারি