মালয়েশিয়ায় রমজানজুড়ে মূল্যছাড়ের প্রতিযোগিতা

সারাদিন ডেস্কসারাদিন ডেস্ক
প্রকাশিত: ৪:২৮ অপরাহ্ণ, মার্চ ৩০, ২০২৩

ছবি- সংগৃহীত

পবিত্র রমজান মাস এলেই মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রীতিমতো মূল্য ছাড়ের প্রতিযোগিতা চলে। দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশ মালয়েশিয়ার সংবিধানের ৩ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‌“ইসলাম ফেডারেশনের ধর্ম। তবে অন্যান্য ধর্ম ফেডারেশনের যে কোনো অংশে নিরাপদে এবং শান্তিপূর্ণভাবে পালন করা যেতে পারে।”

এর মানে হলো, মালয়েশিয়া ইসলামকে সরকারি ধর্ম হিসাবে ঘোষণা করলেও, মালয়েশিয়ার জনসংখ্যা যা বিভিন্ন বংশ ও বিশ্বাস নিয়ে গঠিত, তারা তাদের নিজ নিজ ধর্ম পালন করতে স্বাধীন। প্রায় ৬১.৩ শতাংশের মুসলিম অধ্যুষিত মালয়েশিয়ার ধর্ম ও সংস্কৃতি নানা বৈচিত্র্যময়। পবিত্র রমজানে এই বন্ধন আরও স্পষ্ট হয়।

রমজান মাসে প্রায় ৫ হাজার স্টলসহ মোট ৭২টি রমজান বাজারের অবস্থান মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুর জুড়ে। যার মধ্যে অধিকাংশ বাজারই প্রতিদিন বিকেল সাড়ে ৪টার মধ্যে শুরু হয়। এরপর গরম গরম সর্বোত্তম খাবার তৈরিতে ব্যস্ত থাকেন ব্যবসায়ীরা।

অবিশ্বাস্য হলেও রমজানে মালয়েশিয়ায় নিত্যপণ্যের দাম ১ টাকা না বাড়িয়ে উল্টো পণ্যের দাম কমানোর প্রতিযোগিতায় থাকেন ব্যবসায়ীরা। রমজান আসার আগে ভোজ্যতেল ও চিনি, মাছ, তরকারির যে দাম ছিল, এখনও তেমনই রয়েছে। মালয়েশিয়ায় খোলাবাজারে দ্রব্যসামগ্রী বিক্রি হয় না। সারাদেশে ছড়িয়ে থাকা চেইন সুপারশপ, হাইপার মার্কেটগুলোতে সব ধরনের নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী বিক্রি হয়।

সুপারশপ ও হাইপার মার্কেটগুলোতে দেখা গেছে, রমজান উপলক্ষে বিভিন্ন পণ্যসামগ্রীতে ডিসকাউন্ট স্টিকার লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। এসব সুপারশপ ও হাইপার মার্কেটগুলোর মধ্যে রয়েছে মাইডিন, জায়ান্ট, এনএসকে, ইকোনসেভ, সেগি ফ্রেশ ও জায়াগ্রোসারি ইত্যাদি।

দেশটিতে পণ্যসামগ্রী, খাদ্যসামগ্রী, খাবার হোটেল, মুদি দোকান, চেইন সুপারশপ ও হাইপার মার্কেটসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের গুণগতমান খুব কঠোর হাতে নিয়ন্ত্রণ করেন দেওয়ান বান্ডারায়া কুয়ালালামপুর (ডিবিকেএল) নামে সরকারি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

Nagad

কোনো অনিয়ম দেখলে গ্রেপ্তারসহ জেল-জরিমানা করেন তারা। এজন্য পণ্যের দাম বাড়ান তো দূরের কথা, মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য রাখাসহ কোনো অনিয়ম করার সাহস পান না ব্যবসায়ীরা।

মালয়েশিয়ানদের পাশাপাশি দেশিয় খাবারে ইফতার করেন প্রবাসী বাংলাদেশিদেরা। সুদূর প্রবাসে থেকেও তাই তৃপ্তি মেটাতে ইফতারে বাঙালি খাবারই তাদের প্রথম পছন্দ। তাই মালয়েশিয়ায় প্রবাসী বাংলাদেশিরা রমজান পালন করেন অনেকটা দেশিয় আমেজে। মুসলিম অধ্যুষিত দেশ হওয়ায় রমজানে শ্রমিকদের নামাজ পড়ার ও রোজা রাখার সুযোগ করে দেওয়া হয় সর্বত্র।

প্রবাসী বাংলাদেশিদের ইফতারিতে খেজুর, জিলাপি, সরবত, জুস, হালিম, ছোলা, মুড়ি, পেঁয়াজু, বেগুনি, চপ, লাচ্চিসহ নানা প্রকারের খাবার রাখা হয়। বাংলাদেশিরা যেখানে থাকেন, সেখানেই একসাথে তারা ইফতার করেন। তাই মালয়েশিয়ানদের পাশাপাশি বাংলাদেশিদের আয়োজনটা বড় হয়। মালয়েশিয়ানরাও অভিভূত হয় বাঙালিদের ইফতারির বিশাল আয়োজন দেখে।

সারাদিন/৩০ মার্চ/এমবি