রাজধানীজুড়ে বিভিন্ন রেস্তোরাঁয় অভিযান

নিজস্ব প্রতিবেদক:নিজস্ব প্রতিবেদক:
প্রকাশিত: ৯:৫৭ অপরাহ্ণ, মার্চ ৩, ২০২৪

রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে অভিযান পরিচালনা করছে ভাটারা থানা পুলিশ। এছাড়াও রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় রেস্তোরাঁয় অভিযান চালিয়েছে আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী।

আজ রোববার (৩ মার্চ) সন্ধ্যার পর গুলশান, ধানমন্ডি, বনানীসহ বেশ কিছু এলাকায় এ অভিযান চলছে। কয়েকটি রেস্তরাঁর ম্যানেজারকে আটক করার খবর পাওয়া গেছে।

বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার গেটে-রাস্তায় পথচারীরদের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করায় আল্লাহর দান বিরিয়ানি হাউস ও কাচ্চি পপস নামের দুটি রেস্টুরেন্টের তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে ভাটারা থানা পুলিশ। সোমবার বিকেল ৫ টায় আবার অভিযানে নামবে ভাটারা থানা।

ভাটারা থানার উপপরিদর্শক মো.আমিনুল বলেন, অভিযানে দেখছি, রেস্টুরেন্টগুলোতে প্রয়োজনীয় অগ্নি নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে কি না। এ ছাড়া রেস্টুরেন্ট পরিচালনা করতে যেসব অনুমোদন প্রয়োজন হয়, সেগুলো রয়েছে কি না।

গুলশানে অভিযান পরিচালনার সময় একটি ভবনে অনিয়ম পাওয়ায় ভবন মালিককে সতর্ক করেছে পুলিশ। পুলিশের এই অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানানো হয়েছে।

এদিকে রাজধানীর পাশাপাশি বিভিন্ন জেলাতেও রেস্টুরেন্টে অভিযান চালাচ্ছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।

Nagad

টাঙ্গাইল শহরে অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থা না থাকায় চার রেস্তোরাঁকে দেড় লাখ টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। রোববার বিকালে শহরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এ অভিযান পরিচালনা করে সদর উপজেলা প্রশাসন। শহরের সুগন্ধা রেস্টুরেন্ট ২০ হাজার টাকা, সুরুচি রেস্টুরেন্টকে ১ লাখ টাকা, ছেফাত রেস্তোরাঁকে ১০ হাজার টাকা ও ঝাউবন রেস্টুরেন্টকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার রাতে আমিন মোহাম্মদ গ্রুপের মালিকানাধীন গ্রিন কোজি কটেজ আগুন লাগে। ওই ভবনটির বিভিন্ন তলায় ছিলো নানান রেস্তোরাঁ।

কয়েক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে দমকলের কর্মীরা। ততক্ষণে ধোঁয়ায় শ্বাসরুদ্ধ হয়ে ও আগুনে নিহত হন বহু মানুষ।

সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী ওই ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ৪৬ জনের। হাসপাতালে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন পাঁচজন।

পুড়ে যাওয়া ভবনে আগুনের সূত্রপাত একটি চা-কফির দোকান থেকেই হয়েছিলো বলে পুলিশের মামলায় অভিযোগ আনা হয়েছে। মামলায় ভবন মালিক আমিন মোহাম্মদ গ্রুপসহ দুইটি রোস্তোরার মালিকদের বিরুদ্ধেও মামলা হয়েছে।

এদিকে আগুনে প্রাণহানির ঘটনার পরই রেস্তোরাঁর নিরাপদ পরিবেশ ও অনুমোদন দিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সারাদেশে সাড়ে চার লাখের বেশি রেস্তোরাঁ রয়েছে।

বেশিরভাগ রেস্তোরাঁয় নেই পর্যাপ্ত অগ্নি নিরাপত্তা, যত্রতত্র ব্যবহার হচ্ছে গ্যাস সিলিন্ডার।

এদিকে বেইলি রোডের দুর্ঘটনার পর রেস্টুরেন্ট ও ফুডকোর্টে মানুষের উপস্থিতি কমে গেছে বলে জানা গেছে। নাম-পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে এক কর্মচারী বলেন, ‘রেস্টুরেন্ট ও ফুড কোর্টের অধিকাংশ ক্রেতাই শিক্ষার্থী কিংবা তরুণ-তরুণী। বেইলি রোডে আগুনের ঘটনার পর ক্রেতা কমেছে। আগে সারাদিনই মানুষের সমাগম থাকত। এখন বলতে গেলে এক প্রকার ফাঁকাই থাকে সারাদিন। বিকেলে ও রাতে কিছু মানুষ আসেন। মানুষের মধ্যে একটা ভয় কাজ করছে।’

খিলগাঁও-তালতলা ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. শাহ আলম বলেন, ‘এসব ভবন আবাসিক সেটা ঠিক, কিন্তু বাণিজ্যিক করার জন্য আমরা আবেদন দিয়ে রেখেছি। এখনো সেটি প্রক্রিয়াধীন। শিগগিরই এসব বিষয়ে সবাইকে নিয়ে বসে কার্যকর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। অগ্নি নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যাপ্ত না রাখলে সেটি আমাদেরই ক্ষতি। আমরা বড় ধরনের কোনো ঝামেলার মুখোমুখি হতে চাই না। ফায়ার সার্ভিসের যারা কর্মকর্তা আছেন তাদের সঙ্গেও আমরা কথা বলেছি। সব মালিকদের সঙ্গে বসে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’