কাজী নজরুলকে জাতীয় কবি ঘোষণার গেজেট প্রকাশের অনুমোদন
প্রেম ও দ্রোহের কবি কাজী নজরুল ইসলামকে জাতীয় কবি হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। উপদেষ্টা পরিষদ তার নাম জাতীয় কবি হিসেবে গেজেট প্রকাশের প্রস্তাব অনুমোদন করেছে। বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) প্রধান উপদেষ্টা কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়, যার সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় এ প্রস্তাব উপস্থাপন করে। তবে, কাজী নজরুল ইসলামের নাম সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব মঞ্জুর হয়নি। সংস্কৃতি সচিব মো. আতাউর রহমান জানান, সংবিধান সংশোধন করার জন্য সংসদের প্রয়োজন, যা বর্তমানে সম্ভব নয়।


১৯৮৭ সাল থেকে কাজী নজরুল ইসলামকে দেশের জাতীয় কবির মর্যাদা দেয়া হলেও এ বিষয়ে রাষ্ট্রীয় কোনো স্বীকৃতি ছিল না। কবির অবদান এবং সাহিত্য কর্মের জন্য তাকে রাষ্ট্রীয়ভাবে জাতীয় কবি হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে।
কাজী নজরুল ইসলাম ১৮৯৯ সালে ভারতের বর্ধমান জেলার আসানসোলে জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯৭৬ সালে বাংলাদেশে নাগরিকত্ব লাভ করেন। ১৮৯৯ সালের ২৪ মে (জ্যৈষ্ঠ ১১, ১৩০৬ বঙ্গাব্দ) ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার আসানসোল মহকুমার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন কাজী নজরুল ইসলাম।
তার উল্লেখযোগ্য রচনাবলি- রণ সংগীত: চল্ চল্ চল্। ছোট গল্প: ব্যথার দান, রিক্তের বেদন, শিউলি মালা। উপন্যাস: বাঁধন হারা, মৃত্যুক্ষুধা, কুহেলিকা। কবিতা: প্রলয়োল্লাস, আগমনী, খেয়াপারের তরণী, বিদ্রোহী, কামাল পাশা, খুকী ও কাঠবিড়ালি, লিচু-চোর, খাঁদু-দাদু, আনোয়ার, রণভেরী, কোরবানী ও মোহররম।
কাজী নজরুল ইসলাম জগত্তারিণী স্বর্ণপদক, স্বাধীনতা পুরস্কার, একুশে পদক, পদ্মভূষণ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানসূচক ডি.লিট উপাধি পেয়েছেন।
১৯৪২ সালে কাজী নজরুল মারাত্মকভাবে স্নায়বিক অসুস্থতায় আক্রান্ত হয়ে পড়লে আকস্মিক তার সব সক্রিয়তার অবসান হয়। মৃত্যু অবধি সুদীর্ঘ ৩৪ বছর তাকে সাহিত্যকর্ম থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন থাকতে হয়। বাংলাদেশ সরকার ১৯৭২ সালে তাকে সপরিবারে কলকাতা থেকে ঢাকায় নিয়ে আসে। ১৯৭৬ সালে তাকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব দেওয়া হয়। সে বছরই ২৯ আগস্ট (১২ ভাদ্র, ১৩৮৩ বঙ্গাব্দ) মৃত্যুবরণ করেন তিনি।