ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা রোগীদের, চিকিৎসকরা আসেন খেয়ালমতো
টাঙ্গাইল ঘাটাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক-নার্সদের সময়মতো হাসপাতালে না আসায় চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন রোগীরা। চিকিৎসকরা নিয়মিত ডিউটি সময় লঙ্ঘন করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে বিশেষ করে শিশু ও বয়স্ক রোগীরা চরম দুর্ভোগে পড়ছেন।
১৪ মে সকালে হাসপাতালের বহির্বিভাগে গিয়ে দেখা যায়, সকাল ৮টা থেকে ১১টা পর্যন্ত বেশিরভাগ চিকিৎসকের কক্ষ বন্ধ। শিশু কনসালট্যান্টের কক্ষের সামনে মায়েরা কোলে সন্তান নিয়ে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। তীব্র গরমে শিশুদের কান্না ছড়িয়ে পড়েছে আশপাশে।


সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, সকাল ৮টা থেকেই চিকিৎসকদের সেবা দেওয়ার কথা থাকলেও সেবাপ্রার্থীদের অভিযোগ, অনেক চিকিৎসক আসেন নিজেদের খেয়াল মতো, কেউ কেউ কিছুক্ষণ রোগী দেখে আবার চলে যান।
তদন্তকালে দেখা যায়, ৮টা ১৩ মিনিটে প্রবেশ করেন মেডিকেল অফিসার ডা. শুভময় পাল, ৮টা ৫১ মিনিটে আসেন জুনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. আলমগীর কবির। বাকি চিকিৎসকদের বেশিরভাগই ৯টা পেরিয়ে হাসপাতালে আসেন। অনেক কক্ষে তালা ঝুলছিল, যদিও ফ্যান ও লাইট চালু ছিল।
সিজারিয়ান অপারেশনের অপেক্ষায় থাকা রোগীদের স্বজনদের অভিযোগ, সকাল ৮টার সময় দিলেও গাইনি চিকিৎসক বনানী ভৌমিক এসেছেন ৯টা ৫০ মিনিটে। অপরদিকে শিশু কনসালট্যান্ট ডা. বিশ্বজিৎ পাল ছুটিতে থাকলেও, তিনি ওই দিন বিকেল সাড়ে ৪টায় একটি বেসরকারি ক্লিনিকে রোগী দেখবেন বলে জানান হেলথ কেয়ারের ম্যানেজার।
রোগীদের অভিযোগ, সরকারি হাসপাতালে নার্স ও চিকিৎসকদের দায়িত্বহীনতা বেড়েই চলেছে। তেলেঙ্গপাড়া গ্রামের বিউটি আক্তার বলেন, “নারী ডাক্তাররা তো সময়মতো আসেই না।” শাহপুর গ্রামের মনসুর আলী বলেন, “সকাল ৮টায় আইছি, ১০টা বাজে, ডাক্তারের দেখা নাই। তালা লাগানো। বারবার এই ভোগান্তি হইতাছে।”
এদিকে, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “লোক না থাকলে ফ্যান-লাইট চালু রাখা বিদ্যুতের অপচয়। এটা বন্ধ করা দরকার।”
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবু নয়িম মোহাম্মদ সোহেল বলেন, “রোগীরা অনেক সময় দেরি করে আসেন, এজন্য চিকিৎসকরাও হয়তো দেরি করছেন।” তবে রোগীর লাইন থাকা সত্ত্বেও ডাক্তার না থাকার বিষয়ে কোনো জবাব দেননি তিনি। আর ফাঁকা কক্ষে ফ্যান ও লাইট চালু থাকার বিষয়ে তিনি বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। সূত্র: আরটিভি