আমরা তো এই দেশের জন্য যুদ্ধ করিনি : মির্জা ফখরুল

রাজশাহী সংবাদদাতা:রাজশাহী সংবাদদাতা:
প্রকাশিত: ৮:৩৫ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ৩, ২০২২

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমরা তো এই দেশের জন্য যুদ্ধ করিনি। সকলের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করবো বলে যুদ্ধ করেছিলাম। কিন্তু আওয়ামী লীগ সেটা চায় না। আওয়ামী লীগের লক্ষ্য, বন্দুক-পিস্তল নিয়ে ক্ষমতায় বসে থাকা। এই দেশ কি তাদের? এই দেশ জনগণের।’

শনিবার (৩ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজশাহী মহানগরীর ঐতিহাসিক মাদ্রাসা ময়দানে আয়োজিত বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এসব কথা বলেন।

এ সময় আওয়ামী লীগের উদ্দেশ্য করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, নয়াপল্টনেই বরাবর আমরা সমাবেশ করে এসেছি, কোনো দিন তো কোনো সমস্যা হয়নি। আজকে হঠাৎ করে আপনাদের মাথায় সমস্যার কথা আসছে কেন?

বিএনপির মহাসচিব বলেন, আমরা আবারো বলছি- তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহাল করতে হবে। অন্যথায় এ দেশে কেনো নির্বাচন হবে না। ওবায়দুল কাদের বলেন, সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে। কোন সংবিধান? যেখানে বার বার কাটাছেঁড়া করা হয়েছে নিজের প্রয়োজনে। সেই সংবিধান অনুযায়ী দেশ চলতে পারে না। তারা এই সংবিধানের অনেক পরিবর্তন করেছে। নতুন নতুন আইন করেছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করেছে। যেখানে ফেসবুকে পোস্ট দিলেও উস্কানি হিসেবে আখ্যা দিয়ে গ্রেপ্তার করা হয় এবং জামিন নেই। আমরা তো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সবার অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য যুদ্ধ করেছিলাম। কিন্তু আওয়ামী লীগ সেটা চায় না। তাদের লক্ষ্য যেমন করে পারো বন্দুক-পিস্তল দিয়ে ক্ষমতায় থাকো। আমরা তো তাদের চাকর নই। এই দেশের মালিক জনগণ।

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সম্পর্কে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এই আওয়ামী লীগ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে ১৭৩ দিন হরতাল করেছে। ওই সময় গানপাউডার দিয়ে একটা বাসের ১১ জনকে হত্যা করা হয়েছিল। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ৫টা নির্বাচন হয়ে গেল। এরা ক্ষমতায় আসার পরে কী করল? ওই ব্যবস্থা পাল্টে দিল। তারা বুঝতে পেরেছে, জনগণ তাদের পছন্দ করে না। তাই সেটা পাল্টে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে গেল।’

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে বিএনপি নির্বাচনে আসতে চায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিধান চাই। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে। অন্যথা এই দেশে কোন নির্বাচন হবে না। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, কী যেন নাম তার? ওবায়দুল কাদের। তিনি বলছেন, সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে। কোন সংবিধান? যে সংবিধানে তোমাদের ক্ষমতায় রাখার জন্য বারবার কাটাছেঁড়া করেছো, সেই সংবিধান? সেই সংবিধান চলতে পারে না।’

Nagad

ঢাকার সমাবেশ সম্পর্কে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আগামী ১০ ডিসেম্বর পার্টি অফিসের সামনে সমাবেশ করতে চাই। এতে আওয়ামী লীগের ঘুম নাই। ঘুম হারাম হয়ে গেছে। এই বুঝি বিএনপি এলো, ভাবতে থাকে। আমরা নয়াপল্টনে অনেক সমাবেশ করেছি। লক্ষ লক্ষ মানুষ হয়েছে। তখন তো কোনো সমস্যা হয় নায়।’

বিএনপি অগ্নি সন্ত্রাস করে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা নিজেরা বাস পোড়ায়, আর বলে বিএনপি করছে। বিএনপির ইতিহাসে এসব নেই।’

পুলিশের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘ভাই পুলিশ? আপনারা কি এই দেশের মানুষের সন্তান না? অত্যাচার নির্যাতন চালাবেন না। এই দেশের মানুষ কোনদিন অন্যায় সহ্য করেনি। পরিষ্কার করে বলছি, আপনাদের সঙ্গে আমাদের শত্রুতা নেই। আপনারা রাষ্ট্রের কর্মচারী, আমরা রাষ্ট্রের মালিক।’

সমাবেশে আসা সমর্থকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘তরুণ-যুবকদের প্রতি আহ্বান রাখতে চাই, আপনারা জেগে উঠুন। দুর্বার গতিতে আসুন। এই ভয়াবহ সরকারের পতন ঘটাতে হবে।’

সারাদিন. ৩ ডিসেম্বর. আরএ