তুরস্ক-সিরিয়ায় ভূমিকম্প: নিহত ৮ হাজার ছাড়াল

সারাদিন ডেস্কসারাদিন ডেস্ক
প্রকাশিত: ১০:৩৪ পূর্বাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ৮, ২০২৩

তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চল ও সিরিয়ায় ভয়াবহ ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা আট হাজার ছাড়িয়ে গেছে। আর ভেঙে পড়া ভবনগুলোর ধ্বংসস্তুপের ভেতর থেকে জীবিতদের বের করে আনতে প্রচণ্ড ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় উদ্ধারকর্মীদের মরণপণ সংগ্রাম এখনও চলছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ডাব্লিউএইচও জানায়, তুরস্ক এবং সিরিয়ায় আড়াই কোটির বেশি মানুষ এই ভূমিকম্পের শিকার হয়েছেন।

দুটি দেশের কয়েক হাজার ভবন ধসে পড়েছে এবং ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়া মানুষদের বাঁচাতে উদ্ধারকর্মীরা প্রাণপণ প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন।

বিবিসি জানায়, উত্তর সিরিয়ায় ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়া লোকজন সাহায্যের জন্য ডাকাডাকি করছেন কিন্তু তাদের ডাকে সাড়া দেওয়ার মতো প্রায় কেউ নেই। ইস্তাম্বুলের একজন তুর্কি সাংবাদিক ইব্রাহিম হাসকোলোলু বিবিসিকে জানান, ‘এখনও অনেক মানুষ ভবনের নিচে আটকা আছেন।তাদের সাহায্যের প্রয়োজন।’

যতোই সময় যাচ্ছে বিপর্যয়ের মাত্রা চোখের সামনে আরও ভয়াবহ হয়ে ওঠছে আর তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। জাতিসংঘের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন ভয়াবহ এই ভূমিকম্পে কয়েক হাজার শিশু মারা যেতে পারে। খবর রয়টার্সের।

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়িপ এরদোগান দেশের ১০টি প্রদেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন। তবে ভূমকম্পে বিধ্বস্ত বেশ কয়েকটি শহরের অধিবাসীরা তাদের ভাষায় উদ্ধার তৎপরতায় অপ্রতুল সাড়ার বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।

Nagad

মালাতিয়া এলাকায় বিধ্বস্ত বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে আত্মীয়-স্বজন হারানো মুরাত আলিনাক বলেন, ‘এখানে একজনও আসেনি। আমরা সম্পূর্ণ নিঃস্ব অবস্থায় প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় তুষারের নীচে আশ্রয়হীন অবস্থায় রয়েছি। আমি এখন কী করবো, কোথায় যাবো?’

সোমবার (৬ফেব্রুয়ারি) ভোররাতে প্রথমে ৭.৮ মাত্রার এবং ঘণ্টাখানেক পর প্রায় সমান মাত্রার আরেকটি ভূমিকম্প তুরস্ক ও উত্তর সিরিয়ায় আঘাত হানলে স্কুল, হাসপাতাল, এপার্টমেন্টসহ কয়েক হাজার ভবন ভেঙে পড়ে। এই দুর্যোগে ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন আর বাড়িঘর হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন অসংখ্য মানুষ।

এদিকে ভেঙে যাওয়া রাস্তা, খারাপ আবহাওয়া ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির অভাবে উদ্ধারকর্মীরা সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় পৌঁছাতে পারছেন না। কোথাও দেখা দিয়েছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির সঙ্কট।

তবে যেটুকু সহায়তা পাওয়া যাচ্ছে তা দিয়েই স্থানীয় জনতা বেঁচে যাওয়া মানুষদের উদ্ধারে প্রাণপণ সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন।

সিরিয়ার ন্যাশনাল আর্থকোয়েক সেন্টারের প্রধান রায়েদ আহমেদ এটিকে ‘ইতিহাসে তাদের রেকর্ড করা সবচেয়ে বড় ভূমিকম্প’ বলে অভিহিত করেছেন। এদিকে, ভূমিকম্পের ঘটনায় তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান সাত দিনব্যাপী রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছেন। এরদোয়ান টুইটারে বলেন, আমাদের সরকারি ও বিদেশি সব দপ্তরে ১২ ফেব্রুয়ারি সূর্যাস্ত পর্যন্ত পতাকা অর্ধনমিত রাখা হবে।

সূত্র : বিবিসি, এএফপি, আল জাজিরা