এসি রুম, একখানা গাড়ি? এগুলো তো আমি চাই না: প্রধানমন্ত্রী

সারাদিন ডেস্কসারাদিন ডেস্ক
প্রকাশিত: ১:২৬ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৬, ২০২৩

এক-এগারোর সেনাসমর্থিত সরকার নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে বলেছিল বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আমাকে বলা হলো- আপনি ইলেকশন (নির্বাচন) করবেন না। আপনাকে প্রধানমন্ত্রীর মর্যাদা দিয়ে রাখা হবে। আমি জিজ্ঞেস করলাম- প্রধানমন্ত্রীর মর্যাদা কী? এসি রুম, একখানা গাড়ি? এগুলো তো আমি চাই না।’

তিনি বলেন, ‘এমন নানান প্রলোভনের প্রেক্ষিতে আমি তাদের বলেছি, আমাকে এসব লোভ দেখিয়ে লাভ নেই। আমার বাবা এ দেশের রাষ্ট্রপতি ছিলেন। আমিও প্রধানমন্ত্রী ছিলাম। ধন-সম্পদ, বাড়ি-গাড়ির প্রতি আমার কোনো লোভ নেই। আমি এসেছি বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য গড়তে, নিজের ভাগ্য গড়ার জন্য নয়।’

আজ রোববার (১৬ জুলাই) সকাল ১০টায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত কলেজের অধ্যক্ষ সম্মেলন ও বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এ সম্মিলনের আয়োজন করে।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা যখন ১৯৯৬ সালে ক্ষমতা আসি তখন দেখি বিজ্ঞান শিক্ষার প্রতি শিক্ষার্থীদের আগ্রহ কম। বিজ্ঞান শিক্ষার জন্য আলাদা কোনো বরাদ্দ ছিল না। ১৯৯৬ সালে যখন ক্ষমতায় আসলাম তখন এসেই ১২ কোটি টাকা বরাদ্দ দিলাম কৃষি গবেষণা খাতে। ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখলাম শুধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির গবেষণা খাতে। ১৯৯৬ সালে এসে কম্পিউটার শিক্ষার ওপর জোর দিলাম। কারণ বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় হলে বিজ্ঞানের প্রতি ছাত্রদের আগ্রহ বাড়বে বলে আমি বিশ্বাস করেছিলাম। আজ সেটার সুফল জাতি পাচ্ছে।’

এ সময় দেশের অগ্রযাত্রা, শান্তি-সমৃদ্ধি বজায় রাখতে মুক্তিযুদ্ধের শক্তির পক্ষে থাকার জন্য শিক্ষকদের প্রতি অনুরোধ জানান প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের সঠিক ইতিহাস জানা দরকার। কারণ ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছিল।’

Nagad

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট সময়ে বাংলাদেশকে উন্নত করতে সক্ষম হয়েছি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রেখে গিয়েছিলেন স্বল্পোন্নত দেশ। ২০২০ সালের জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী, ২০২১ সালে সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করেছি। তখনই বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পায়। নির্বাচনী ওয়াদা আমরা রক্ষা করি।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেশের মানুষ শিক্ষিত হোক, এটা বিএনপি-জামায়াত জোটের কখনোই ইচ্ছা ছিল না। মানুষকে পদদলিত করে রাখা, অন্ধকারে রাখা এবং তাদের শোষণ করে রাখাই তাদের লক্ষ্য। নিজেরা অবৈধ সম্পদের মালিক হবে- এটাই বোধহয় তাদের চেষ্টা।’

২০০১ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত দেশে ত্রাসের রাজত্ব চলে জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ‘তারপর ভুয়া ভোটার তালিকা দিয়ে নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়ার চেষ্টা। পাঁচ বার বাংলাদেশ দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন। ৫০০ জায়য়গায় বোমা হামলা, গ্রেনেড হামলা। যার ফলে ইমার্জেন্সি ডিক্লেয়ার (জরুরি অবস্থা জারি) হয়। আর সেই ইমার্জেন্সিতে সবার আগে গ্রেফতার করা হলো আমাকে। আজকে সেই দিন। আমি আত্মবিশ্বাস হারাইনি। আমরা সবসময় ন্যায় ও সত্যের জন্য সংগ্রাম করেছি।’

অনুষ্ঠানে চারটি বিষয়ে মাস্টার্স প্রোগ্রাম চালুসহ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিজিক্যাল মাস্টারপ্ল্যান উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী অস্বচ্ছল ও বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিক্ষার্থীদের বৃত্তির চেক তুলে দেন সরকারপ্রধান।

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি ও শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. মশিউর রহমানের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সারাদেশ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত ২২৫৭টি কলেজের অধ্যক্ষরা অংশ নিয়েছেন।