ভূরুঙ্গামারীতে যৌতুকের দাবীতে গৃহবধূকে নির্যাতনের অভিযোগ
কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে যৌতুকের দাবীতে এক গৃহবধূকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে । ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার পাথরডুবী ইউনিয়নের পশ্চিম পাথরডুবী গ্রামে। নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ মর্তভান দক্ষিণ পাথরডুবী গ্রামের মৃত আ: খালেকের মেয়ে। এ ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল কুড়িগ্রামে মামলা করেছেন ভুক্তভোগী।
জানা গেছে, প্রায় আট বছর পূর্বে উপজেলার পশ্চিম পাথরডুবী গ্রামের মৃত হাসেম আলীর ছেলে জসিম উদ্দিনের সাথে বিয়ে হয় তার। বিয়ের কিছুদিন পর স্বামী জসিম উদ্দিন যৌতুকের জন্য চাপ দিতে থাকে।যৌতুক না পেয়ে এক পর্যায়ে চলতি বছরের ২৩ মার্চ তাকে কয়েক দফা মারধর করে স্বামী। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ভুরুঙ্গামারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান। সাত দিন হাসপাতালে চিকিৎসার পর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলে তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেন জসিম ও তার পরিবারের লোকজন। বর্তমানে ভুক্তভোগী মর্তভান বেগম একটি কন্যা সন্তান নিয়ে বাবার বাড়িতে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
ভুক্তভোগী মর্তভান বেগম জানান, নানা প্রলোভন দেখিয়ে তার আগের স্বামীর সংসার থেকে জসিম বিয়ে করে তাকে। বিয়ের পর তার গর্ভে একটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। সাত বছর ঘর-সংসার করাবস্থায় যৌতুকের দাবীতে সবসময় তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে আসছে। সহ্য করতে না পেরে এক পর্যায়ে ভূরুঙ্গামারী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন। বিচার না পেয়ে চলতি বছরের ০১ এপ্রিল কুড়িগ্রাম আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলা তদন্তের জন্য ভুরুঙ্গামারী উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কাছে পাঠায়। চলতি বছরের ১২ জুন তদন্তকারী কর্মকর্তা অভিযুক্ত স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন দ্বারা অন্যায়ভাবে প্রভাবিত হয়ে তাদের অভিযোগের দায় থেকে মুক্তির অপপ্রয়াসে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। পরে ন্যায় বিচারের জন্য আদালতে ওই তদন্তের বিরুদ্ধে নারাজীর আবেদন করেন। এর শুনানি চলমান রয়েছে। তিনি স্বামীর সাথে ঘর-সংসারের আশায় সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে ন্যায় বিচারের দাবী জানান।
এ ঘটনায় জসিম উদ্দিন নির্যাতনের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ওই বউকে নিয়ে সংসার করবো না।
পাথরডুবী ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুস সবুর জানান, গৃহবধূর উপর নির্যাতনের বিষয়ে সত্যতা রয়েছে। দু’পক্ষই আমার কাছে এসেছিল। সমাধানের জন্য তিনবার চেষ্টা করেছি। মতবিরোধ থাকায় সমাধান করা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে আইনের আশ্রয় নিতে বলেছি।