‘দেশে মোবাইল ইন্টারনেটের দাম জাতিসংঘের ঘোষিত লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাচ্ছে’

মোবাইল ইন্টারনেট এর মূল্য একটি দেশের জিডিপির অর্থাৎ মাথাপিছু আয় ২ শতাংশের কম খরচ হবে ইন্টারনেট খরচ বাবদ। অর্থাৎ ৩০ টাকায় বা এর নিচে একজন গ্রাহক ১ জিবি ইন্টারনেট ক্রয় করতে পারবে। ২০২১ সালে জাতিসংঘের খুশি তো বাংলাদেশ নির্ধারিত ইন্টারনেটের মূল্য নির্ধারণে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করেছে বলে বলা হয়। কিন্তু বর্তমানে জাতিসংঘের ইন্টারনেটের মূল্য নির্ধারণের যে লক্ষ্যমাত্রা সেটি মানা হচ্ছে না বলে দাবি করেছে গ্রাহক অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশন।

আজ সোমবার (১২জুন) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সংগঠনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ২০২১ সালের ১৭ মার্চ আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ইউনিয়ন (আইটিইউ) ও বৈশ্বিক ইন্টারনেট ফোরাম এলায়েন্স ফর এফোর্টেবল ইন্টারনেট (এফোরএআই) the affordability of ICT services 2021 নামে এক প্রতিবেদনে বলা হয় বাংলাদেশ মোবাইল ইন্টারনেটের দাম জাতীয় সংঘের ব্রডব্যান্ড কমিশনের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পেরেছে। কিন্তু ওই সময় বাংলাদেশে ৩০ টাকার নিচে এক জিবি ইন্টারনেট পাওয়া যেত। আর ২০২৩ জুন মাসে ৪৬ টাকায় ১ জিবি ইন্টারনেট পাওয়া যাচ্ছে না। গত দেড় বছরে ইন্টারনেটের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে প্রকারান্তরে প্রায় গড়ে ৩০ শতাংশ।

মাননীয় ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী গত বছর ১০ নভেম্বর মোবাইল ইন্টারনেট এর মূল্য নির্ধারণ করবেন বলে ঘোষণা দিলেও আজ অবধি ইন্টারনেট ডাটার মূল্য নির্ধারিত হয়নি। আমাদের জিজ্ঞাসা ইন্টারনেট ডাটার মূল্য নির্ধারণ করে কে? জানিয়ে সংগঠনটি বলছে, কমিশন যদি মূল্য নির্ধারণ করে থাকে তাহলে সে মূল্য নির্ধারণ করার ঘোষণা অবশ্যই গণমাধ্যমে প্রকাশ করবে কমিশন। যেমনটি এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন তার লাইসেন্সি প্রতিষ্ঠানের সেবার মূল্য নির্ধারণ সংবাদ সম্মেলন বা বিজ্ঞপ্তি মাধ্যমে প্রকাশ করে থাকে। আমরা আজ পর্যন্ত ইন্টারনেট ডাটার মূল্য বিজ্ঞপ্তি আকারে প্রকাশ হয়েছে বলে লক্ষ্য করি নাই।

গত মাসের ৩০ তারিখে কমিশন ইন্টারনেট ডাটার প্যাকেজের পরিমাণ, মূল্য এবং ক্যারি ফরওয়ার্ড নিয়ে আলোচনা সভার আয়োজন করে। কিন্তু গ্রাহকদের মূল চাহিদা মানসম্পন্ন যাকে আমরা কোয়ালিটি সার্ভিস বা নিরবিচ্ছিন্ন সেবা বলে থাকে, ডাটার সাশ্রই মূল্য, হয়রানি মুক্ত গ্রাহক সেবা, ক্রয় কৃত ডাটার লাস্ট মাইল পর্যন্ত ব্যবহার এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়নি।

গ্রাহকের অজান্তে হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট হলেও সেটি ফেরত দেবার কোন আলোচনা নেই।
অনেকটা শাক দিয়ে মাছ ঢাকার মত আলোচনা হয়েছে বই অন্য কিছু নয়-বলেও বিবৃতিতে বলা হয়েছে।

আমরা চাই নিরবিচ্ছিন্ন network সাশ্রয়ী এবং ন্যায্য মূল্যে ইন্টারনেট ডাটা ক্রয় করার সুবিধা এবং হয়রানি মুক্ত গ্রাহক সেবা। পাশাপাশি গ্রাহকদের অজান্তে অর্থ কেটে না নেয়া। ইন্টারনেটের মূল্য নির্ধারণ করা অত্যন্ত জরুরী বলে আমরা মনে করি না হলে প্রতিদিন যেভাবে দাম বৃদ্ধি করা হচ্ছে পাশাপাশি ডাটার পরিমাণও কমিয়ে বিক্রয় করা হচ্ছে তা একপ্রকার গ্রাহকদের সাথে প্রতারণা ছাড়া আর কিছুই না। আমরা চাই কমিশন অপারেটরদের কাছেও মূল্য নির্ধারণের প্রস্তাব দাবি করুক আবার গ্রাহক ও স্টেক হোল্ডারদের পক্ষ থেকেও যৌক্তিক মূল্য তুলে ধরার প্রস্তাব করা হোক।

Nagad